চট্টগ্রাম, ১৯ অক্টোবর, ২০২২:
ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ২০ বছর বয়সী যুবক রোহান আগরওয়াল। যিনি ২ বছর আগে পায়ে হেঁটে পৃথিবী যাত্রার উদ্দেশ্যে বেরিয়েছেন। ৮শ’ দিনে কখনও তিনি পায়ে হেঁটে, আবার কখনও লিফট নিয়ে ১৫ হাজার কিঃ মিঃ পথ ভ্রমণ করে এখন তিনি রাঙামাটি
জেলার কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থান করছেন। প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধকরণ, পরিবেশ সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করা, ভালোবাসা, শান্তির বার্তা দেওয়া এবং বৈচিত্র্যের প্রচার করাই তার উদ্দেশ্য বলে তিনি সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, পরিবেশকর্মী ও নানা পেশার মানুষকে বিষয়টি অবহিত করেন।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) তিনি কাপ্তাই উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) মারজান হোসাইনের দপ্তরে তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং ভ্রমণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত করেন। এছাড়া তিনি কাপ্তাই প্রেস ক্লাব সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাথে বিষয়গুলো সম্পর্কে মতবিনিময় করেন। এসময় কাপ্তাই ফোরামের এডমিন এ আর লিমন, যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির, সাংস্কৃতিক কর্মী উজ্জ্বল মল্লিক উপস্থিত ছিলেন।
আলাপকালে রোহান আগরওয়াল জানান, আজ থেকে ২ বছর আগে ভারতের উত্তর প্রদেশ হতে আমি এই বার্তা নিয়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছি। এরপর ভারতের ঝাড়খ-, বিহার, উড়িষ্যা, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, অরুনাচল, আসাম এবং ত্রিপুরা রাজ্য ঘুরে সপ্তাহ খানেক আগে বাংলাদেশে এসেছি। সফরের অংশ হিসেবে আমি ফেনী, চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে প্লাস্টিকের নেতিবাচক ব্যবহার, পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি, ভালবাসা, শান্তির বার্তা দেওয়া এবং বৈচিত্র্যের প্রচার করার বিষয়ে মতবিনিময় করেছি।
তিনি আরও জানান, প্রতিটি জায়গায় আমি মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পেয়েছি। এরপর আমি বান্দরবান জেলা, কক্সবাজার জেলা ঘুরে মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং পরে সাইবেরিয়ার ওমিয়াকমে হেঁটে যাব, যেখানে তাপমাত্রা মাইনাস ৭২ ডিগ্রি এবং এটি পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল স্থান। স্থলপথে ভারত থেকে সেখানে পৌঁছানো প্রথম দক্ষিণ এশীয় হিসাবে আমি গিনেস বুকে রেকর্ড করব। যেখানে হেঁটে যেতে সময় লাগবে ৫ বছর।
এক প্রশ্নের জবাবে রোহান আগরওয়াল জানান, কোন রকম সরকারি বা কোন কর্পোরেট কোম্পানির সহযোগিতা ছাড়া আমি এই বিশ্ব পরিভ্রমণে বের হয়েছি। কোন সময় না খেয়েও ছিলাম, তবে বিভিন্ন জায়গায় কিছু কিছু মানুষ আমাকে আর্থিক এবং মানসিকভাবে সহযোগিতা করেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে, কাপ্তাই উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারজান হোসাইন জানান, প্লাস্টিক দূষণ, পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা এবং শান্তির বার্তা নিয়ে রোহান আগরওয়াল কাপ্তাইয়ে এসেছে। এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে পরিবেশের উপর যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে এবং প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহারের ফলে পরিবেশের যে ক্ষতি হচ্ছে, তার এই সফরের মাধ্যমে দেশ, সমাজ এবং পৃথিবীর কাছে একটি বার্তা পৌঁছে যাবে।
কাপ্তাই ফোরামের এডমিন এ আর লিমন জানান, কর্ণফুলী নদীতে প্লাস্টিক ফেলার ফলে দূষণের মাত্রা বেড়ে গেছে, এটা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে কর্ণফুলী নদী সহ পরিবেশকে বাঁচাতে হলে রোহান আগরওয়াল যে বার্তা নিয়ে এদেশে এসেছে, তার সাথে সকলকে একাত্ম হতে হবে।
Discussion about this post