চট্টগ্রাম, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২:
পটিয়ায় এক প্রবাসীর ঘরে ডাকাতির করে চলে যাওয়ার সময় সেখানে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে এক ডাকাত। তার পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। অন্যদিকে তার ফিঙ্গার প্রিন্ট জাতীয় তথ্য সার্ভারেও ম্যাচ করছে না। যে কারণে পুলিশ ধারণা করছে নিহত ব্যক্তি রোহিঙ্গা নাগরিক হতে পারে।
৫ সেপ্টেম্বর, সোমবার ভোর রাতে উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের হিলচিয়া গ্রামের বাদল চৌধুরীর ঘরে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ডাকাতি করে পালানোর সময় জনতার হাতে আটক এক ডাকাত গণপিটুনিতে নিহত হয়। তার অনুমানিক বয়স ৩৫ বছর। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র।
পটিয়া থানার ওসি ( তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম সত্যতা নিশ্চিত করে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, নিহত ডাকাতের আঙ্গুলের ছাপ কারো সাথে মেলেনি। সার্ভারে তার তথ্য নেই। বাংলাদেশি নাগরিক হলে সার্ভারে তার তথ্য পাওয়া যেত। জাতীয় তথ্য সার্ভারে যেহেতু তথ্য নেই, সেহেতু সে রোহিঙ্গা নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তার পরিচয় নিশ্চিতে আরো অনুসন্ধান ও অন্য ডাকাতদের সনাক্তের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, নিহতের পরিচয় জানতে তার আঙ্গুলের ছাপ নেয়া হয়। কিন্তু তার আঙ্গুলের ছাপ সার্ভারে ম্যাচ করেনি। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে- নিহত ডাকাত রোহিঙ্গা নাগরিক হতে পারে।
৫ সেপ্টেম্বর, সোমবার ভোর রাতে উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের হিলচিয়া গ্রামের বাদল চৌধুরীর ঘরে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশের পর পুলিশ পরিচয় দিয়ে পরিবারের সদস্য রুবি চৌধুরী (২৫), বাদল চৌধুরী (৭৫), কৃষ্ণা চৌধুরী (৫০) ও টুম্পা চৌধুরীকে (২২) অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এ সময় মারধরে তিনজন আহত হয়। ডাকাত দল নগদ ৫০ হাজার টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণলঙ্কার নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে সোমবার সকালে পটিয়া থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।
জানা গেছে, হিলচিয়া গ্রামের বাদল চৌধুরীর ঘরে রাত অনুমান ৩টার দিকে ৫-৬ জনের অস্ত্রধারী ডাকাত দরজা ভেঙে প্রবেশ করে। এরপর তারা ঘরের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। ডাকাতি করে পালানোর সময় পরিবারের সদস্যদের চিৎকার শুনে লোকজন এসে একজনকে আটক করে। এরপর গণপিটুনি দিলে সে ঘটনাস্থলে মারা যায়।
কৃষ্ণা চৌধুরী জানিয়েছেন, ডাকাতদল ঘরে প্রবেশের পর তারা পুলিশ পরিচয় দেয়। এর পর তাদের জিম্মি করে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। ডাকাতির সময় আলমিরার চাবি দিয়ে তালা খুলতে বিলম্ব হওয়ায় পুত্রবধূ রুবি চৌধুরীসহ ৩ জনকে ডাকাতদল মারধর করে।
পটিয়ায় দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এর আগে গত ২১ আগস্ট, রবিবার পটিয়ায় ফার্মের দুই কর্মচারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাছুরসহ ৭টি গরু ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাত অনুমান ২টার দিকে উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের পাঁচুরিয়া গ্রামের চৌধুরী ডেইরি ফার্মের কর্মচারী মোহাম্মদ কামাল (৫২) ও মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনকে (৫৫) জিম্মি করে গরু ডাকাতির এ ঘটনা ঘটে। ডাকাত দল ডাকাতি করে চলে যাওয়ার সময় ফার্মের সিসিটিভি মনিটর, সিসিটিভির ক্যামেরা, ডিভিআর নিয়ে যায়। গরু ও মালামালের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২২ লক্ষ টাকা।
এ ঘটনায় ফার্মের মালিক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বাদি হয়ে পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম জানান, গণপিটুনির শিকার নিহত এক ডাকাতের মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে। এরপর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়না তদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
কিন্তু গণপিটুনিতে নিহত পরিচয়হীন ডাকা কে রোহিঙ্গা নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে।