চট্টগ্রাম,১০ মে, ২০২৪:
চট্টগ্রামে বহুল আকাঙ্ক্ষিত বিশেষায়িত বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে গতকাল। আগামী আগস্ট মাস থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
চীনা অর্থায়নে হবে এটি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের অধীনে এই বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্বাস্থ্যসেবা দিবে।
একনেকের সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বার্ন ইউনিটের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুযায়ী ছয়তলা ভবন নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে সময় লাগবে প্রায় দুই বছর। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী আগস্ট মাস থেকে প্রকল্পটির নির্মাণ শুরু হবে। প্রায় এক একর জমিতে ১৫০ শয্যার বার্ন ইউনিটটি চালু করতে জনবল লাগবে অন্তত ৫০০ জন। বার্ন ইউনিট নির্মাণে ব্যয় হবে ২৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীন সরকার অনুদান হিসেবে দেবে ১৮০ কোটি টাকা। বাকি ১০৫ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার দেবে। সরকারের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ আলাদা অবকাঠামোতে চট্টগ্রামে বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করে চীন সরকার। এরপর চীনা প্রতিনিধি দল গত ২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর চমেক হাসপাতাল এলাকায় সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেন। এরপরের কয়েক বছরে চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের কয়েক দফা বৈঠক হলেও বার্ন ইউনিটের নির্মাণ কার্যক্রম স্থান নির্বাচন জটিলতায় আটকে ছিল। পরবর্তীতে গত ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট তৈরির জন্য চমেক হাসপাতাল এলাকার গোঁয়াছি বাগান এলাকায় স্থান নির্বাচন করে চমেক হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের জানায় চীন সরকার। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে চট্টগ্রামে এসে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন, ভবনের নকশা অনুযায়ী সবকিছু পরিমাপ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো যাচাই করে চীনা প্রতিনিধিদল। সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ এ বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। হাসপাতাল চীনা সরকার তৈরি করলেও এটি পরিচালনার জন্য জনবল নিয়োগ করবে বাংলাদেশ।
১৫০ শয্যার বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের মধ্যে থাকছে ১০টি বার্ন আইসিইউ বেড, ২৫টি এইচডিইউ বেড, ৩টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার ও মহিলাদের জন্য ৪৫ বেডসহ ১১৫ বেডের বার্ন ওয়ার্ড। রোগী আসা-যাওয়ার সুবিধার জন্য থাকবে তিনটি রাস্তা। ছয়তলা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটিতে প্রথমতলায় থাকবে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ড এবং ওপিডি, দ্বিতীয়তলায় তিনটি অপারেশন থিয়েটার (ওটি), নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), ৩য় তলায় হাইডিপেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), চতুর্থ এবং পঞ্চমতলায় থাকবে সাধারণ ওয়ার্ড, ষষ্ঠ তলায় ওয়ার্ডের সঙ্গে থাকবে অফিস।
সার্বিক বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, চমেক হাসপাতালের বিশেষায়িত বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। চীনা কর্তৃপক্ষ শীঘ্রই ডিজাইন রিভিউ ফাইনাল করে আগামী আগস্ট মাসে কাজ শুরু করতে পারবেন বলে জানিয়েছে। চীন সরকার বার্ন ইউনিটের অবকাঠামো নির্মাণ, যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র দিবে। জনবল এবং অন্যান্য ওষুধপত্র আমাদের। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভ্যাট ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ১০৫ কোটি টাকা দেবে সরকার।
Discussion about this post