চট্টগ্রাম, ২১ জুন, ২০২৫:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় হেফজখানার ১০ বছর বয়সী এক ছাত্রকে একাধিকবার বলাৎকারের অভিযোগে হাফেজ কায়েম উদ্দিন রাব্বি (১৮) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক করে ২০ জুন পুলিশে সোপর্দ করেছে সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে ছাত্রের মা বাদি হয়ে ওই শিক্ষককে একমাত্র আসামি করে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সাতকানিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আশেকের পাড়া হাবিবিয়া তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ রাব্বি সাতকানিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইছামতিরকূল এলাকার মো. ইউনুছের ছেলে।
ছাত্রটি জানায়, রাব্বি হুজুর বিভিন্ন সময় রাতে তার শোয়ার ঘরে গিয়ে ৫ থেকে ৬ বার খারাপ কাজ করেছে। এতে রাজি না থাকলেও তাকে মেরে ফেলাসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখানো হত। ভয়ে বিষয়গুলো সে মাকেও বলেনি। পরে সহ্য করতে না পেরে বিষয়টি মাকে খুলে বলে। মা প্রথমে বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারেনি। অপমান সহ্য করতে না পেরে মাদ্রাসার সামনে সাতকানিয়া সরকারি কলেজের ভেতর থাকা সেনাক্যাম্পে গিয়ে বললে তারা হুজুরকে ধরে এনে পুলিশে দেয়।
ওই ছাত্রের মা বলেন, এক বছর আগে ছেলেকে হাফেজ বানানোর উদ্দেশ্যে মাদ্রাসায় দিয়েছিলাম। কিন্তু দেখা গেছে শিক্ষার বদলে হুজুর আমার ছেলের সাথে খারাপ কাজ করেছে। যেটি আমি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না। এ ঘটনায় থানায় আমি মামলা করেছি। আমি ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
আশেকের পাড়া হাবিবিয়া তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা হারুনুর রশিদ বলেন, সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার রাতে মাদ্রাসায় এসে বলে যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক কায়েম উদ্দিন রাব্বিকে সেনা ক্যাম্পে শুক্রবার সকালে হাজির হওয়ার জন্য। সে অনুযায়ী ওই শিক্ষক সেনা ক্যাম্পে গেলে সেনাবাহিনী তাকে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগে কোন অভিযোগ পাননি বলে জানান তিনি। তবে সাতকানিয়ায় স্থাপিত সেনাবাহিনী ক্যাম্পে দায়িত্বরত ক্যাপ্টেন মো. শামীম পারভেজ বলেন, এ ঘটনা ছাড়াও অতীতেও ওই হুজুর বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে এমন কর্মকাণ্ড করেছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। আজ দোষ স্বীকার করার পরে তাকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতকানিয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
ওই হেফজখানার মো.জাহেদুল ইসলাম নামে আরেক শিক্ষককে বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল বলে মাদ্রাসার প্রধান মওলানা জানিয়েছেন।
সাতকানিয়া পুলিশ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.তফিকুল আলম বলেন, এ ঘটনায় ২০ জুন রাত ৯টার দিকে বলাৎকারের শিকার মাদ্রাসা ছাত্রের মা বাদি হয়ে ওই শিক্ষককে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। ২১ জুন সকালে গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষককে আদালতে সোপর্দ করা হবে।