চট্টগ্রাম, ২২ জুন, ২০২৫:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (এলডিপি) যোগ দিলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ৪ নেতা। ২১ জুন দলের প্রাথমিক সদস্য পদের ফরম পূরণ করে দলটির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি মো. এয়াকুব আলীর চট্টগ্রাম নগরের ব্যবসায়িক কার্যালয়ে তারা যোগদান করেন বলে দলের দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শিমুল জানিয়েছেন। যোগদানকারীরা হলেন- উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক থানা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও ১০ নম্বর কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনির আহমদ, কেঁওচিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ও একই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু তালেব সিকদার, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও একই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহেব মিয়া এবং উত্তর সাতকানিয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও একই ইউনিয়নে সংরক্ষিত মহিলা (৭, ৮ ও ৯ নম্বর) আসনের সাবেক ইউপি সদস্য রোকেয়া বেগম।
এর আগে আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপ কমিটির সদস্য শামসুল ইসলামও এলডিপিতে যোগদান করেছিলেন বলে এলডিপির সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে নিষিদ্ধ আ. লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের এলডিপিতে যোগদানকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে না পেরে ফেসবুকে নিষিদ্ধ দলটি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাদের কেউ কেউ নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাতকানিয়া আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের একাধিক নেতা জানান, উত্তর সাতকানিয়া যুবলীগের দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী লীগের দলীয় গ্রুপিং ও আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাদের ব্যবহার করে ২০১৬ সালের ৪ জুন সাতকানিয়ার ১০ নম্বর কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন মনির। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নৌকা মার্কার প্রতীকে উত্তর সাতকানিয়া যুবলীগের সভাপতি ওচমান আলী।
চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার পিএস মো. আরিফের হাত ধরে গণভবন পর্যন্ত পৌঁছে যান মনির। সে সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে পরাজিত করার পরও কিভাবে এবং কার মাধ্যমে তিনি (মনির) গণভবন পৌঁছান তা নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার পক্ষ থেকে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা ও করোনাকালীন সময়ে ব্যক্তিগত (বিপ্লব বড়ুয়া) ও দলীয় কোন সামগ্রী আসলে তা বিতরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন চেয়ারম্যান মনির।
তবে চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভী ও সাতকানিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম.এ মোতালেবের অকুণ্ঠ সমর্থন ও সরব প্রচারণার পরও ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের উপ প্রচার সম্পাদক আবদু আলিমের সাথে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান মনির।
এলডিপিতে যোগদানকারীদের মধ্যে আবু তালেব সিকদার ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। সম্প্রতি এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি জেল থেকে জামিনে বের হন।
সাহেব মিয়া ও রোকেয়া বেগম দলীয় মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতেন সামনের কাতারে ।
যোগদানকারীরা সকলে এলডিপিতে যোগদানের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি মোহাম্মদ এয়াকুব আলী
এলডিপিতে যোগদানকারী আবু তালেবের মামলার ব্যাপারে বলেন, বিষয়টি কেঁওচিয়া ইউনিয়নের এলডিপির নেতৃবৃন্দ ভালো বলতে পারবেন। তাদের মাধ্যমেই সকলের যোগদান সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, মনির সহ অন্য যোগদানকারীরা এলডিপির প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করে দলে যোগ দিয়েছে। যে কোনো কেউ দল পরিবর্তনের অধিকার রাখে।
যোগদান অনুষ্ঠানে এলডিপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে- দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি মো. এয়াকুব আলী, সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শিমুল, সাতকানিয়া উপজেলা সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরী চেয়ারম্যান, কেঁওচিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মো. নুরুন্নবী, সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম উদ্দীন, এলডিপি নেতা মো. সেলিম ও গণতান্ত্রিক ছাত্রদলের সাতকানিয়া উপজেলার আহ্বায়ক মো.পারভেজ উপস্থিত ছিলেন।