চট্টগ্রাম, ২৪ এপ্রিল, ২০২২:
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় আপন ছোট ভাই জানে আলমকে হত্যার দায়ে দুই আসামি, নিহতের বড় ভাই সহ তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে ব্যাব। আসামিরা হলেন নিহত জানে আলমের বড় ভাই খোরশেদ আলম ও তার স্ত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা খালেদা বেগম(৪০)। রবিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার শান্তিরহাট ছোট বেতুয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে জানে আলম হত্যা মামলার এই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭ এর হাটহাজারী ক্যাম্প। খোরশেদ আলম রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সিপাহী পাড়া এলাকার লাল মিয়া সওদাগর বাড়ির মৃত উকিল আহম্মদের ছেলে এবং খালেদা বেগম খোরশেদ আলমের স্ত্রী। যিনি সরফভাটা সিপাহী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।
গত ৯ এপ্রিল বিকালে বসত বাড়ির জায়গার সীমানা পিলার নির্ধারণ নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। পিলার নিয়ে বিরোধের জের ধরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার নিহত সিএনজি অটোরিকশা চালক জানে আলম ও তার আপন ভাই খোরশেদ আলমের মধ্যে তর্কবিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিতর্কের এক পর্যায়ে ভিকটিমের আপন ভাবি খালেদা এবং ভাই খোরশেদ আলম লোহার সাবল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ছোট ভাই নিহত ভিকটিম জানে আলমের মাথায় আঘাত করলে জানে আলমের মাথা ফেটে রক্তাক্ত জখম হয়। পরবর্তীতে জানে আলম চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে তার বড় ভাই খোরশেদ আলম লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে জানে আলমের শরীরের বিভিন্নস্থানে উপুর্যপরি আঘাত করতে থাকলে জানে আলম অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পডে যায়। তখন জানে আলমের স্ত্রী জোসনা বেগম ডাক-চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মুমূর্ষু অবস্থায় জানে আলমকে প্রথমে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানে আলমের অবস্থা আশংকাজনক দেখে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। জানে আলম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ এপ্রিল সকালে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী জোসনা বেগম বাদি হয়ে গত ১২ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলার দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানায় নিহত ভিকটিম জানে আলমের আপন বড় ভাবি খালেদা বেগম (৪০) এবং বড় ভাই খোরশেদ আলমের(৪৫) নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নিহত জানে আলম দীর্ঘ দিন প্রবাসে থাকাকালীন কষ্টার্জিত অর্থ তার আপন বড় ভাই খোরশেদ আলমের কাছে পাঠাতেন। পরবর্তীতে জানে আলম দেশে ফিরে আসার পর তার ভাই খোরশেদ আলমের কাছে বিদেশ থেকে পাঠনো টাকা ফেরত চাইলে আসামি খোরশেদ আলম পাওনা টাকা ফেরত দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। মূলত জানে আলম বিদেশ থেকে আসার পর টাকা ফেরত চাওয়ায় পরবর্তীতে বসতভিটার জায়গা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
র্যাব জানায়, জানে আলম হত্যার ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক হত্যাকা- হিসাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। যে কারণে ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। তাতে হত্যা মামলার দুই আসামিকে ফটিকছড়ির ভ’জপুর থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদেও বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে।
Discussion about this post