চট্টগ্রাম, ১৩ জুন, ২০২২:
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে দুটি তদন্ত দল ছয় মাস আগেই পরিদর্শন করেছিল সীতাকু-ের বিএম ডিপো সহ ১০০ কারখানা ও বিভিন্ন স্থাপনা।
যেখানে প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি, মালিক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের তথ্য ছাড়াও ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিস ছাড়পত্র, বৈদ্যুতিক অনুমোদনপত্র, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স বা অনুমতিপত্র সহ জেলা প্রশাসন, গ্যাস বিতরণ কোম্পানি, জ্বালানি বিভাগ, মাদক অধিদপ্তর, পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনসহ চৌদ্দটি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল।
কিন্তু পরিদর্শনের ৬ মাস না যেতেই বিএম ডিপোতে অগ্নিকা- ও বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় সারাদেশ জুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। নিহত হয় প্রায় ৪৭ জন শ্রমিক কর্মচারি ও ফায়ার ফাইটার। আহত হয় প্রায় দেড়শ মানুষ। আর আর্থিক ক্ষতি প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে – সেই পরিদর্শনের ছয় মাস পরই যদি এমন ঘটনা ঘটতে পারে তাহলে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা কোন পর্যায়ে?
এ ব্যাপারে সীতাকু-ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, কারখানা বা ডিপোগুলো কীভাবে চলছে এবং কোথায় কোথায় ঘাটতি আছে সেগুলো দেখতে হয়েছে। টিমে থাকা প্রত্যেকটি দপ্তরের প্রতিনিধিরা তাদের বিভাগের বিষয়গুলো দেখে সে সম্পর্কে রিপোর্ট দিয়েছিলেন। ঘাটতি মেটানোর সুপারিশ ছিল।
তবে তাদের পরিদর্শন করা কারখানা ও ডিপোগুলোর কি অবস্থা সে সম্পর্কে জানতে সীতাকু- উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার মোবাইল নম্বরে ফোন করলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের শ্রম পরিদর্শক শুভংকর দত্ত বলেন, কারখানা পরিদর্শনের পর তখন প্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘লঙ্ঘন সমূহ’ পাওয়া গিয়েছিল সেগুলো উল্লেখ করে আমরা বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডে একটি চিঠি দিয়েছিলাম। একই সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সমস্যাসমূহ উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু পরবর্তিতে বিনিয়োগ বোর্ড কি করেছে সে সম্পর্কে আমরা আর জানি না।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, সীতাকু-ের যে ডিপোটিতে অগ্নিকা- ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে- যা হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের বিস্ফোরণ বলে ধারণা করা হচ্ছে চট্টগ্রামের সেই হাইড্রোজেন পার অক্সাইড তৈরির অন্তত ৪/৫টি কারখানা রয়েছে। এই হাইড্রোজেন পার অক্সাইড বিএম ডিপোর চট্টগ্রামের যে মালিক তাদের নিজস¦ একটি কারখানা রয়েছে চট্টগ্রামে দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকায়।
চট্টগ্রামের শ্রম পরিদর্শক শুভংকর দত্ত আরো বলেন, পরিদর্শন টিমে আমরা নয় সরকারের একাধিক প্রতিষ্ঠান এখানে ছিল। বর্তমানে কারখানাগুলোকে কোনো সতর্ক করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড কি পদক্ষেপ নিয়েছে সে সম্পর্কে তিনি অবগত নন।
কলকারখানা, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনা রোধ ও নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করণে চট্টগ্রাম জেলার জন্য ১১ টি সমন্বিত পুরদর্মন ও পর্যবেক্ষণ টিম গঠন করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলায় গত বছর ২১ অক্টোবর ১১ টি টিমের সমন্বয়ে একটি পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শন টিম গঠন করে। যারা গত ২ ডিসেম্বর কলকারখানা পরিদর্শনের কথা বলে পত্র প্রেরণ করেছিল।
Discussion about this post