চট্টগ্রাম, ১৩ নভেম্বর, ২০২২:
চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্থানে গরু চুরির হিড়িক পড়েছে। চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলার কোথাও না কোথাও প্রতিরাতে গরু চুরি হচ্ছে। সব খবর পত্রিকায় না আসলেও যেসব খবর জানা যাচ্ছে তাতে গরু চুরিতে খামারি ও গরু পালনকারীরা বড় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। অন্যদিকে আতঙ্কে দিন পার করছে গরু পালনকারীরা।
চট্টগ্রামে বেশি গরু চুরি হচ্ছে ফটিকছড়ি, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী, রাঙ্গুনিয়া, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া সহ কম বেশি প্রায় সব উপজেলাতেই।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত প্রায় দুই মাসে চন্দনাইশ থেকে প্রায় দুই ডজন গরু চুরি হয়েছে। একই সময়ে বোয়ালখালী থেকে চুরি হয়েছে ১ ডজনের মত গরু। গত ৩ মাসে ১৬টিরও বেশি গরু চুরি হয়েছে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়।
চট্টগ্রাম জেলার সর্বত্র এভাবে গরু চুরির হিড়িক পড়লেও প্রশাসন এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
গত ১২নভেম্বর ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌর এলাকা হতে এক রাতে ৪ গরু চুরি হয়েছে । রাত আনুমানিক ৩টার পর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের দৌলতপুর গ্রামের আলম বাড়ির আবু তাহেরের ৩টি ও মুহাম্মদ আবুল হাসেমের ১টি গরু চোরের দল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গতকাল (শনিবার) সকালে আবু তাহের ও আবুল কাসেমের স্ত্রী আলমারা বেগম ও সাহেদা বেগম বাদি হয়ে ফটিকছড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এই নিয়ে নাজিরহাট পৌরসভা ও রোসাংগিরী ইউনিয়নের ২ কি.মি এলাকা হতে ৬ পরিবারের ২০টি গরু চুরি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত আবুল কাসেমের স্ত্রী সাহেদা বেগম বলেন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমার দুঃখের সংসার। নিজ সন্তানের মতো করে গরুকে লালন-পালন করেছি। আমার সব শেষ হলো। গরিবের জন্য কেউ নেই।
তাহেরের স্ত্রী আলমারা বেগম জানান, তিনি মাইক্রোক্রেডিট সংগঠন থেকেসুদে টাকা নিয়ে গরু কিনেছেন। এখনো টাকা শোধ হয়নি। গরুগুলোই বড় করে বিক্রি করে টাকা শোধ করার আশায় ছিল। কিন্তু এর মধ্যে তার সব গরু চুরি করে নিয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানায়, গত শনিবার রাতের শুরুর দিকে আনুমানিক রাত ৩টার পর চোরের দল গোয়াল ঘরের তালা ভেঙ্গে ৪টি গরু চুরি করে দ্রুত পালায়। সকালে গোয়াল ঘরে না দেখে ক্ষতিগ্রস্তদের আহাজারীতে ঘটনা জানাজানি হয়।
এদিকে একের পর এক ঘটনা ঘটলেও এখনো অধরা চোরের দল। পুলিশের নিরব ভূমিকা জনমনে নানান প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, থানায় অভিযোগ করার পরও কেন চোরদের ধরতে পুলিশ মাঠে নামছে না। আর কতো গরু চুরি হলে পুলিশ মাঠে নামবে এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।
জানা গেছে, কাছাকাছি দূরত্বে পিকআপ ভ্যান রেখে তাতে চোরাই গরু তুলে দ্রুত সটকে পড়ছে চোরের দল।
রাত জেগে পাহারা দিয়ে গরু রক্ষা করতে পারছে না চোরের হাত থেকে। অন্যদিকে গরু পালনকারীরা রাতে পাহারা দিতে গিয়ে একই সাথে প্রাণের ভয়ও করছে।
গরু চুরি ঠেকাতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে এলাকার লোকজন গরুচোরের গোলাগুলির শিকার হয়েছে বলেও জানা গেছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন , ‘এ ব্যাপারে আমি ওসিকে সন্ধ্যার সময় বলেছি গরু চুরি ঠেকাতে না পারলে আপনি ব্যর্থ।’ ছবি: সংগ্রহ
Discussion about this post