চট্টগ্রাম,১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩:
আজ বৃহস্পতিবার মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএল ফাইনালে মাঠে নেমেছিল তারকায় ভরা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও মাশারাফির সিলেট স্ট্রাইকারস। ৬ঃ৩০ মিনিটে শুরু হয় ম্যাচ। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই কানায় কানায় ভরে যায় স্টেডিয়াম। টস হেরে ব্যাট করতে নামে মাশরাফির সিলেট। ওপেনিং করতে নামে নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়। তবে দ্বিতীয় ওভারেই জুটি ভাংগে সিলেটের। তানভীর ইসলামের করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই উইকেট হারায় সিলেট। পেছনের পায়ে ভর দিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান তৌহিদ হৃদয়। ওয়ান ডাউনে অধিনায়ক মাশরাফি নেমে তাকে অনুসরণ করেন। তিনিও তৃতীয় ওভারে আন্দ্রে রাসেলের বলে ইমরুল কায়েসকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান। এরপর মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম নামেন ব্যাটিংয়ে। তৃতীয় উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৭৯ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। কিন্তু ১৩ তম ওভারে মঈন আলীর বলে বোল্ড হয়ে ব্যাক্তিগত ৪৫ বলে ৬৪ রান করে ফিরে যান নাজমুল হাসান শান্ত। তার এই ইনিংসে তিনি বিপিএলের এই আসরে ৫০০ রানের কোটা স্পর্শ করেন। ১৫ ম্যাচে ৩৯.৬৯ গড় ও ১১৬.৭৪ স্ট্রাইক রেটে ৫১৬ রান করেছেন । ১৫ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে চার হাফসেঞ্চুরি। শান্ত আউট হওয়ার পর জিম্বাবুয়ান খেলোয়াড় রায়ার্ণ বার্ল নামেন। ১১ বলে ১৩ রান করে তিনিও মুস্তাফিজুর রহমানের বলে সাজঘরে ফিরেন। থিসারা পারেরাও তাকে অনুসরণ করে সুনিল নারিনের বলে সাজঘরে ফিরে যান। একইভাবে জর্জ লিন্ডে ও জাকির হাসান তারাও ৯ রান ও ১ রান করে প্যাভলিয়নে ফিরে যান। মুশফিকুর রহিম ৪৮ বলে ৭৪ রানের দানবীয় একটি ইনিংস করে অপরাজিত থাকেন। সবশেষে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিমের দারুণ ব্যাটিং নৈপুন্যে স্বস্তির অবস্থানে পৌঁছায় সিলেট। অতিরিক্ত ১৩ রানসহ ১৭৫ রান করে স্কোরবোর্ডে ১৭৬ রানের টার্গেট দেয় সিলেট স্ট্রাইকারস। রান তাড়া করতে নেমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সদের পক্ষ থেকে ওপেন করতে নামে লিটন দাস ও সুনিল নারিন। দলীয় ২৭ রানের মাথায় তৃতীয় ওভারেই উইকেট পড়ে যায় কুমিল্লার। রুবেল হোসেনের বলে জর্জ লিন্ডের হাতে কেচ দিয়ে বসেন সুনিল। ৫ বলে ১০ রান করে প্যাভলিয়নের দিকে হাঁটা শুরু করেন তিনি। পরের ওভারেই কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস দলীয় ৩৪ রানের মাথায় ২ রান করে জর্জ লিন্ডের বলে আউট হয়ে সুনিল নারিনকে অনুসরণ করেন। ১৩ তম ওভারে দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরি করা লিটন রুবেল হোসেনের বলে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে বসেন। ৩৯ বলে ৭টি ৪ ও একটি ৬ মেরে ৫৫ রানের দারুণ একটি ইনিংস করেন তিনি। এরপর কুমিল্লার যেন হারি হারি অবস্থা। কিন্তু মইন আলী ও জনসন চার্লসের দুর্দান্ত পার্টনারশিপে ফের শিরোপা দখলে নিলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ৫২ বলে ৭টি ৪ ও ৫টি ৬ মেরে ৭৯ রান করে অপরাজিত থাকেন জনসন চার্লস। অন্য দিকে ১৭ বলে ২টি ৪ ও ১টি ৬ মেরে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন মঈন আলী।
২০২৩ বিপিএল ফাইনালে দারুণ একটি ম্যাচ উপহার দিয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও সিলেট স্ট্রাইকার্স। এই পর্যন্ত মোট ৪ বার শিরোপার দেখা পেয়েছে নাফিছা কামালের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ফাইনাল ম্যাচ শেষ হতেই স্টেডিয়ামের লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভক্তদের মোবাইলের ফ্লাশ লাইটে আলোকিত হয়ে যায় স্টেডিয়াম। দেখার মত এক দৃশ্য। নানা কন্টোভার্সি নানা বিতর্কের পরেও দারুণ একটা বিপিএল উপহার পেয়েছে ভক্তরা। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে সামনের আসর নিয়ে নানা আশা-প্রত্যাশা। সাথে সাথে তৈরি করছে নানা প্রশ্ন।