চট্টগ্রাম, ১০ মার্চ ২০২৩:
তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির অব্যাহতভাবে চেঁচামেচি- দেশে গণতন্ত্র নাই, মানুষের কথা বলার অধিকার নাই -এগুলোর মধ্যেই ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা যখন প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যে বাংলাদেশ গত বছরের তুলনায় এক ধাপ এগিয়েছে, ‘তারমানে বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চা অব্যাহত আছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রগতি হয়েছে।’
শুক্রবার, ১০ মার্চ দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউস প্রকাশিত বিশ্ব গণতন্ত্রচর্চা সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা প্রতিদিন টেলিভিশনের পর্দায় সকাল-বিকাল-সন্ধ্যা কথা বলে, সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অহেতুক সমালোচনা করে যে বলে- আমাদের কথা বলার অধিকার নাই, সেটি যে অসার মিথ্যা, সেটি ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশে গণতন্ত্রচর্চা অব্যাহতভাবে সুসংগত রয়েছে। এটি আরো হতো যদি বিএনপি সঠিকভাবে গণতন্ত্র চর্চা করত।’
‘বিএনপির তো অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রই নাই’ মন্তব্য করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাদের সর্বশেষ সম্মেলন কখন হয়েছে সেটা তারা নিজেরাও বলতে পারে না। এক কলমের খোঁচায় বিএনপিতে নেতা হয়, আবার এক কলমের খোঁচায় বাদ যায়। তারা যদি গণতন্ত্র চর্চা করত, দেশে সার্বিকভাবে গণতন্ত্রচর্চায় আরও সহায়ক ভূমিকা রাখত, তাহলে গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশ আরও অনেক ধাপ এগিয়ে থাকতো।’
বিএনপি মহাসচিবের ‘সরকারের রশি ধরে টান দেয়ার সময় এসেছে’ এমন বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা তো রশি ধরে টান দিয়েছিল ১০ ডিসেম্বর। সরকারকে রশি ধরে টান দিতে গিয়ে সেই রশি ছিঁড়ে পড়ে গিয়ে তাদেরই কোমরটা ভেঙ্গে গেছে। এখন আবার টান দিতে গেলে তাদের কোমর আরো ভেঙ্গে যাবে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটা মনে রাখতে হবে সরকারের ভিত, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভিত অনেক গভীরে প্রোথিত। এই রশি টানাটানি ১৪ বছর ধরে তারা করেছে, এতে তাদের কোনো লাভ হয়নি বরং নিজেরাই বারবার রশি ছিঁড়ে পড়ে গেছে।’
ড. ইউনূস সম্পর্কে ৪০ বিশ্বনেতার বিবৃতিটি একটি বিজ্ঞাপন: তথ্যমন্ত্রী
ড. ইউনূসকে নিয়ে ‘বিশ্বনেতাদের বিবৃতি’র খবর প্রসঙ্গে প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটিকে বিবৃতি বলা যাবে না, এটি একটি বিজ্ঞাপন। ওয়াশিংটন পোস্টে প্রায় কোটি টাকা খরচ করে ৪০ জনের নামে একটি বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়েছে। বিজ্ঞাপন আর বিবৃতির মধ্যে পার্থক্য আছে।’
উল্লেখ্য গ্রামীণ টেলিকমের মালিক ও গ্রামীণ ফোনের প্রায় ৩৪ শতাংশের মালিক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করে বিশ্বের ৪০ জন খ্যাতনামা ব্যক্তির নাম গত ৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় পুরো এক পাতার বিজ্ঞাপন আকারে ছাপা হয়।
এ বিষয়ে সম্প্রচার মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ড. ইউনূস বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নাগরিক। তার প্রতি যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই, এভাবে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিবৃতি আমি বাংলাদেশে দেখি নাই। বিশ্ব অঙ্গনেও এরকম হয় কিনা জানিনা। এরকম বিবৃতি কেনা বা বিজ্ঞাপন দিয়ে বিবৃতি, সেটাকে আবার কোটি টাকা খরচ করে প্রকাশ করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত, সেটিই হচ্ছে প্রশ্ন। যেভাবেই হোক ইউনুস সাহেব নোবেল জয়ী। তার পক্ষে এরকম একটা বিবৃতি বিজ্ঞাপন দিয়ে ছাপানো -এটি তার ব্যক্তিত্বকেই খর্ব করেছে। আমার প্রশ্ন- তার এত টাকা কোথা থেকে আসে?’
‘নদী ও জীবন রক্ষায় নোঙর এগিয়ে যাক’
এদিন মতবিনিময় শেষে নদী নিরাপত্তার সংগঠন নোঙর ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট সুমন শামস পরিবেশবিদ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের হাতে ‘নদী সংস্কৃতি ও শিল্প-সাহিত্য মুখপত্র নোঙর’ এর ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত নদী সংখ্যার একটি কপি তুলে দেন।
ড. হাছান মাহমুদ পরিবেশ ও নদীপ্রকৃতি রক্ষায় নোঙরের দুই দশকের ভূমিকার প্রশংসা ও অগ্রযাত্রা কামনা করেন। ২০০৪ সালের ২৩ মে গভীর রাতে মেঘনা নদীর চাঁদপুরের বাঁকে এমভি লাইটিং সান লঞ্চটি ডুবে সুমন শামসের মা-সহ প্রায় দুইশত মানুষের মৃত্যুর পর থেকে নদী নিরাপত্তা ও পরিবেশরক্ষার শপথে কাজ করছে নোঙর। সূত্র:https://www.facebook.com/100044509181081/posts/pfbid0sfCEKgJBJXwWSPhnaRcCy7xQT5EUuXJBqLyAZbGZWSUSMjF1cTiDpxRiTbY4QUg3l/?app=fbl
Discussion about this post