চট্টগ্রাম, ১৬ জুলাই, ২০২৪:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে দিনমজুর খুনের রহস্য উন্মোচন করেছে থানা পুলিশ।
চন্দনাইশ থানাধীন দোহাজারী পৌরসভা, পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও সাতকানিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে গত সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, দোহাজারী পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের সদর উল্লাহ পাড়ার মৃত ফরিদ আহমদের ছেলে মো. নুরুল আলম তেভেজ (২৭) ও একই এলাকার আবু তাহেরের ছেলে জাওয়াদুল করিম জাবু (২৪)।
ঘটনার মূল দুই হোতাকে গ্রেপ্তার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা চলতি মাসের ১৩ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইব্রাহিম খলিল নামে এক দিন মজুর সিএনজি চালিত অটোরিক্সা করে দোহাজারী পৌরসভা সদর থেকে বাজার করে সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশস্থ নিজ বাসায় ফিরছিলেন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বিওসি’র মোড় এলাকায় পৌঁছলে ১টি মোটর সাইকেল ব্যারিকেড দিয়ে অটোরিক্সার গতিরোধ করে। পরে ছিনতাইকারীরা ইব্রাহিমের কাছে থাকা টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এসময় ছিনতাইকারীরা ইব্রাহিমের বুকে ছুরি মেরে তার পকেটে থাকা ৮১০টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরে অটোরিক্সা চালক ইব্রাহিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কালিয়াইশ ইউনিয়নের মৌলভীর দোকানস্থ জনসেবা হসপিটালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার বলেন, ছিনতাই ঘটনায় ছুরিকাঘাতে দিনমজুর খুনের রহস্য উন্মোচন আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জের বিষয় ছিল। তথ্য প্রযুক্তি ও ছদ্মবেশ ধারণ করে মামলা দায়েরের ১২ ঘণ্টার মধ্যে ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের আসল রহস্য উন্মোচিত হয়। তাদের কাছ থেকে মোটর সাইকেল, টাকা ও ধারালো কাঁচি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানান, নিহত ইব্রাহিম খলিল পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা থানার কুমারী বাজার ঘুমুরমুখ এলাকার মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে। তিনি দীর্ঘ ১৩-১৪ বছর যাবৎ সাতকানিয়ার বিওসি’র মোড় এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে দিন মজুরের কাজ করত। পরিবারের সাথে বনিবনা না হওয়ায় তার স্ত্রী ও সন্তান চট্টগ্রাম নগরীতে বসবাস করত। মৃত্যুর খবর পেয়ে স্ত্রী রেনু আরা বেগম থানায় এসে নিজে বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা দুই ছিনতাইকারীকে আসামি করে ১৫ জুলাই রাতে থানায় মামলা করেন।
ওসি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মঙ্গলবার সকালে আদালতে পাঠালে বিকালে ২জনই চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
আজ (মঙ্গলবার) বিকালে দুই ছিনতাইকারীই পৃথক পৃথকভাবে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক মাহমুদুল হক ও চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এর বিচারক ফারদিন মোস্তাকিমের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
Discussion about this post