চট্টগ্রাম, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪:
‘আমি বাবা-মার সাথে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে বসবাস করি। ওমানের সোহার শহরের বাংলাদেশ স্কুলের নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত আছি। আমার ছোট ভাই নাহিদুল ইসলাম মানিকও একই স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। দীর্ঘদিন পর বাবা-মার সাথে দেশে বেড়াতে এসেছি। ইচ্ছে ছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখবো। কিন্তু সেটি আর হলো না। কারণ আমাদের চলাচলের রাস্তা দিয়ে মাটির ট্রাক নিতে নিষেধ করায় প্রতিপক্ষের লোকজন আমার পরিবারের সদস্যদের
উপর হামলা করে। বাবাকে বেধড়ক পিটুনি থেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার একটি পা ভেঙ্গে দিয়েছে। নতুনভাবে সাজতে যাওয়া বাংলাদেশে এমনটি প্রত্যাশা করিনি আমি। আমি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি এর সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশা করছি। কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন ১৫ বছরের হালিমা আকতার তুলি।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) গভীর রাতে বাড়ির সামনের কাঁচা রাস্তা দিয়ে মাটির ট্রাক নিতে নিষেধ করায় হালিমা আকতার তুলির বাবা দারুল ইসলাম ও তাদের পরিবারের সদস্যদের উপর দলবল নিয়ে হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় বাবা দারুলকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তার মেয়ে হালিমা আক্তার তুলিকে মেরে পা ভেঙ্গে দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন।
ঘটনাটি ঘটেছে সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কমিরা পাড়া এলাকায়।
ভুক্তভোগী দারুল ইসলাম জানান, আমি গত ১৮ ডিসেম্বর পরিবার নিয়ে ওমান থেকে বাড়িতে আসি। আমার জায়গার ওপর রাস্তা তৈরি করে আবু তৈয়ব রাতের অন্ধকারে ট্রাকযোগে মাটি নিয়ে যাচ্ছিল। এসময় আমি বাধা দিই। এতে তৈয়ব ক্ষিপ্ত হয়ে ২৫ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে মেসেঞ্জারে ফোন দিয়ে আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। একই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে সাতকানিয়া থানা ও সাতকানিয়ায় অবস্থানরত সেনাবাহিনীর কাছে তৈয়বের বিরুদ্ধে আমি বাদি হয়ে অভিযোগ দিয়ে আসি। বৃহস্পতিবার রাতে আবারও রাস্তা দিয়ে ট্রাক নিয়ে মাটি নিতে গেলে আমি পুনরায় বাধা দিই। এতে তৈয়ব দলবল নিয়ে লাঠি দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। এ সময় আমার স্ত্রী ও মেয়ে আমাকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে স্ত্রীকে মারধর করা হয়। মেরে ভেঙ্গে দেওয়া হয় আমার মেয়ের ডান পা।
অভিযুক্ত আবু তৈয়ব (৩৫) বাজালিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ পাড়া এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবু তৈয়ব জানান, ওই রাস্তাটা সকলেই ব্যবহার করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। আমি যখন ওই রাস্তা দিয়ে মাটির ট্রাক নিয়ে যাচ্ছিলাম তখন দারুল ইসলাম গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপর আমি প্রতিবাদ করলে তার সাথে আমার ধস্তাধস্তি হয়। তার মেয়েকে আমি মারধর করিনি। ধস্তাধস্তির সময় তার মেয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে পা ভেঙ্গে গেছে।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দারুল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Discussion about this post