চট্টগ্রাম,০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দরজা ভেঙ্গে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চারটি বসত ঘরে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে ডাকাত দলের মারধরে দুই গৃহবধূ আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত পৌঁনে তিনটার দিকে উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর হাতিয়ারকুল কুদ্দুস সওদাগর বাড়ি এলাকায় এ ঘটনায় ঘটে। আহত গৃহবধূর মধ্যে সৌদি প্রবাসী রফিকুল ইসলামের স্ত্রীর বেবী আক্তারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মৃত খায়ের আহমেদের স্ত্রী খতিজা আক্তারকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি থানা এখনও অবগত নয় বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল কাদের চৌধুরী ও কুদ্দুস সওদাগরের ছেলে আব্দুল মোমেন জানান, রোববার রাত পৌঁনে তিনটার দিকে মুখোশ ও হাফপ্যান্ট পরিহিত এবং অস্ত্রধারী ২৫-৩০ জনের একদল ডাকাত প্রথমে উত্তর হাতিয়ার কুল জব্বারের বসতঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে নগদ ৩০ হাজার টাকা, এক ভরি স্বর্ণালংকার, দেড় হাজার সৌদি রিয়াল, ৫ টি মোবাইল ফোন সেট ও বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়। পরে পর্যায়ক্রমে পার্শ্ববর্তী মৃত খায়ের আহমদ, নুর আহমদ ও মৃত আলী আহমদের ঘরে একই কায়দায় প্রবেশ করে তিনটি মোবাইল ফোন, প্রায় তিন ভরি স্বর্ণালংকার, প্রায় এক লাখ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্রসহ ছয় লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
নুর আহমদের ছেলে সৌদি প্রবাসী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী বেবি আক্তার বলেন, প্রথমে দরজা ভেঙ্গে ৭-৮ জনের ডাকাত দল ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে আমাকে ও ঘরের অন্যান্য সদস্যদের জিম্মি করে। আমার যা আছে তা দিয়ে দিতে বলে। আমি রাজি করলে লোহার খুন্তি দিয়ে আমাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। পরে কানে থাকা দুল ও শরীরে থাকা অন্যান্য স্বর্ণালংকার লুটে নেয় ডাকাতদল। আলমারিতে থাকা প্রায় ৫০ হাজার টাকা ও ২৬ হাজার টাকা দিয়ে নতুন কেনা হাতে থাকা একটি মোবাইল ফোন লুটে নেয়। কানের দুল নেওয়ার সময় ডান কানের লতি পুরো এবং বাম কানের লতির প্রায় অংশ ছিড়ে যায়। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছি আজ সকালে (সোমবার)। এছাড়া আমার পার্শ্ববর্তী চাচী শাশুড়ি খতিজা আকতারকে লোহার খুন্তি দিয়ে ব্যাপক মারধর করে আহত করে ডাকাতদল।
নুর আহমদের আরেক ছেলে ও ঢাকায় জুতার কারখানায় কর্মরত মো.জাফর আলম বলেন, রাত চারটার দিকে আমার স্ত্রী নাজমা আক্তার আমাকে মোবাইল ফোনে ঘরে ডাকাত ঢোকার বিষয়টি জানায়। আমার স্ত্রী মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা দিতে গড়িমসি করলে ডাকাত দল আমার বড় মেয়েকে পা দিয়ে চেপে ধরে এবং ছোট ছেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মোবাইল ও টাকা দিতে বাধ্য করে।
সাতকানিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল মুন্নাফ বলেন , ডাকাতির ঘটনাটি আপনার মুখ থেকে আমি প্রথম শুনলাম। বিষয়টি দেখার জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।
Discussion about this post