চট্টগ্রাম, ৩১ মার্চ, ২০২২:
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গদি নিয়ে টানাটানি চলছে। গদি টিকবে কি টিকবে না তা নিয়ে ঘুম হারাম ইমরান খানের। সংসদে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মুসলিম লীগ ও পিপলস পার্টি সহ তাদের নতুন এলায়েন্স। আজ পাকিস্তানের সংসদে অনাস্থা ভোটের কথা থাকলেও ডেপুটি স্পিকার ভোটাভুটির আগেই রবিবার ১১ টা পর্যন্ত সংসদ মূলতবি গোষণা করেন।
তবে আজ রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, রবিবারের অনাস্থা ভোটে তার কোনো আস্থা নেই। পাকিস্তান জনগণই তাদেও গন্তব্য নির্ধারণ করবে।
ইতিমধ্যে বিরোধী দলগুলো ইমরাখ খানের তেহরিক ই ইনসাফ পার্টিও বেশ কিছু সংসদ সদস্যকে তাদের সাথে ভিড়িয়েছেন। যার কারণে ইমরান খানের ঘুম হারাম। ৩৪২ আসনের মধ্যে ১৭২ ভোট না পেলে ইমরান খান আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। তেহরিক ই ইনসাফের প্রধান শরিক দল এমকিউএম বুধবার ইমরান বিরোধী জোটে যোগ দেয়ার পর পরই ইমরানের গদি রক্ষা আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। বর্তমানে ইমরানের দলের সংসদ সদস্য হচ্ছে ১৬৪ জন। এর আগে তারা পার্টি থেকে এ মাসে ২০ জন এমপি বেরিয়ে গেছে বলে বিরোধী দলগুলো দাবি করে। যার প্রেক্ষিতে তারা অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের কথা জানায়। সব মিলে ইমরান বিরোধী জোটে ১৯৯ ভোট ও ইমরানের পক্ষে ১৪২ ভোট রয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়।
ইমরানের দলীয় সাংসদরা ইমরানের পক্ষ ত্যাগ করার কথা বলে গত ২৮শে মার্চ বিরোধী দলীয় নেতা শাহবাজ শরীফ পার্লামেন্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন মুসলিম লীগ- (নওয়াজ) নেতা শাহবাজ শরীফ। প্রস্তাব উত্থাপনের পরই সংসদ ৩১ মার্চ পর্যন্ত মূলতবি ঘোষণা করেন ডেপুট স্পিকার কাশেম সুরি। আজ সংসদ বসলে সেই প্রস্তাব নিয়ে সংসদ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আবার সংসদ অধিবেশন মূলতবি ঘোষণা করা হয়। যা আবার ৩ এপ্রিল সাড়ে ১১ টার পর বসবে। সরকার পতনের আশঙ্কায় অনাস্থা প্রস্তাব মোকাবিলায় মোকোবেলায গড়িমসি করা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন। ।
এদিকে আজ রাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়া ভাষণে বলেছেন, রবিবার অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হবেন তিনি। বিদেশি শক্তির সাহায্য নিয়ে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে জানান তিনি। দেশের সার্বভৌমত্ব বিক্রির ষড়যন্ত্রও হচ্ছে।
মূলত ইমরান খানের সাথে সামরিক বাহিনীর বিরোধ শুরু হওয়ায় ইমরান খানের বিরুদ্ধে জোট বেধেছে বিরোধীদলগুলো। কারণ পাকিস্তানে ‘মূল কর্তৃপক্ষ’ সেনাবাহিনীর সমর্থন ছাড়া বিরোধী দল যেমন আন্দোলন সংগ্রাম করে কোনো সুবিধা করতে পারে না তেমনি কেউ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়ও টিকতে পারে না।
পাকিস্তানে বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরে ইমরান খান সরকারের পদত্যাগ ও পুনর্নিবাচনের দাবিতে আন্দোলন করছিল। তারা পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) নামে জোট গঠন করে ১১ দল মিলে। তারপর আন্দোলন গড়ে তুলে সংসদ ও রাজপথে। বিরোধী এমপিরা ইমরানকে হটাতে ৮ মার্চ সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন। মূলত সেনাবাহিনীর সাথে ইমরান খানের সম্পর্কে ভাটা শুরু হবার কারণেই বিরোধী দলগুলো সুযোগ নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। তবে আরও নতুন ঘটনার জন্য রবিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে পাকিস্তানের মানুষদের। সূত্র: সংবাদমাধ্যম
Discussion about this post