চট্টগ্রাম,১৪ জুন, ২০২২:
র্যাব-৭ ধর্ষণ ও অপহরণ মামলার ৩ আসামিকে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে।
র্যাব এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জেলার সীতাকু-ে পানি পানের অজুহাতে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ মোহাম্মদ সেলিম মিয়া (২৮) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী থানায় মামলা করার পর গত সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭। সীতাকু- থানায় হস্তান্তরের পর গতকাল মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার জানান, ওই গৃহবধূর স্বামী প্রবাসী। শাশুড়ি, দেবর ও তিন বছরের একটি ছেলে সন্তান নিয়ে ওই গৃহবধূ সীতাকু-ের মৌলভীবাজারের আমতল এলাকায় বসবাস করেন। স্বামী প্রবাসী হওয়ায় বাড়ির বেশিরভাগ কাজই করতে হয় দেবর ও শ্বাশুড়িকে। গত ৫ মে বিকেলে ঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে আনতে তার শাশুড়ি ছেলেকে নিয়ে বাড়ির পাশের একটি মুদি দোকানে যান। এসময় কেউ না থাকার সুযোগে বাড়িতে ঢুকে পড়েন গ্রেপ্তার হওয়া আসামি সেলিম মিয়া। পান করার জন্য এক গ্লাস পানি চান ওই গৃহবধূর কাছে। তার অনুরোধে গৃহবধূ পানি আনতে ঘরের ভেতরে গেলে পেছন পেছন সেলিম মিয়াও ঘরে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে দেন। এরপর গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন তিনি। এক পর্যায়ে গৃহবধূর চিৎকারে শাশুড়িসহ আশপাশের মানুষ এগিয়ে এলে পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান সেলিম।
র্যাব কর্মকর্তা নূরুল আবছার জানান, পরে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বাদি হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার খবর শুনে সীতাকু-ে আত্মগোপন করেন আসামি সেলিম মিয়া। গোপন তথ্যে ভিত্তিতে তার অবস্থান শনাক্ত করার পর সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে ভাটিয়ারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অপর ঘটনায় কক্সবাজারের মোঃ জামাল উদ্দিনের ১৩ বছরের কন্যা লিজা মনিকে অপহরণ ও মুক্তিপণ চাওয়ায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম একজন আসামি আটক ও লিজাকে উদ্ধার করে। জানা যায়, লিজা গত ২৮ মে নিজগৃহ থেকে চাচাতো বোনের সাথে পলায়ন করে। পরবর্তীতে চট্টগ্রামে এক বাসায় আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে মেয়েটি চাকরি করতে থাকে। পরবর্তীতে লিজাকে না পেয়ে আত্মীয়-স¦জনের বাসাসহ সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি পর ৫ জুন লিজার মামা তারেক মিয়া কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। এদিকে আশ্রয়দাতা ব্যক্তি লিজার পরিবারকে মুক্তিপণের জন্য ইমু থেকে কল দেয়।
গত ৯ জুন অভি নামক ইমু আইডি দিয়ে অপরিচিত জনৈক ব্যক্তি তারেকের ইমু আইডিতে মেসেজের মাধ্যমে তার ভাগ্নির হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে খোঁজখবর নেয়। পরবর্তীতে গত ১০ জুন পুনরায় মেরাজ নামক ইমু আইডি হতে লিজার ১ টি ছবি প্রেরণ করে এবং জানায় তোমার ভাগ্নি আমার কাছে আছে, তোমার ভাগ্নিকে ফেরত পেতে হলে আমাকে ২ লাখ টাকা ৫ দিনের মধ্যে দিতে হবে। না হলে তোমার ভাগ্নিকে আর ফেরত পাবে না। তারপর দাবিকৃত টাকা আদায়ের জন্য বারবার মেসেজ দিয়ে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
পরে লিজার মামা তারেক অপহরণকারীকে গ্রেফতার এবং লিজাকে উদ্ধারের জন্য র্যাব-৭, চট্টগ্রামকে বিষয়টি অবহিত করে।
পরে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম, অপহরণকারীকে গ্রেফতার এবং লিজাকে উদ্ধারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে জানতে পারে যে, ইমু আইডি হতে লিজার অপহরণকারী সেজে কল দেওয়া মোঃ হাছিবুল ইসলাম (২০) চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানার মোজাফফর কলোনিতে বসবাসকারী। এই তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৩ জুন র্যাব সেখানে অভিযান চালিয়ে আসামি ররিশালের বাকেরগঞ্জের মোঃ হাছিবুল ইসলামকে(২০) গ্রেফতার করে এবং তার বাসা হতে লিজা মনিকে (১৩) উদ্ধার করে।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী হতে কুখ্যাত সন্ত্রাসী অস্ত্র ও গণধর্ষণ মামলার আসামি এহসানকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
জানা যায়, র্যাব-৭, চট্টগ্রাম, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে কতিপয় দুষ্কৃতিকারী নাশকতামূলক কর্মকা-ের উদ্দেশ্যে অবৈধ অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানার চাম্বল এলাকায় কুখ্যাত সন্ত্রাসী মোঃ এহসান এর বসতঘরে অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৩ জুন রাত আড়াইটায় র্যাব ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোঃ এহসান(৫০), পিতা-মৃত আব্দুল মোতালেব, সাং-চাম¦ল, থানা-বাঁশখালী, জেলা-চট্টগ্রামকে আটক করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী নিজ এলাকার একজন কুখ্যাত অপরাধী। সে তার সহযোগীদের নিয়ে চাম্বল এলাকায় অবৈধভাবে ছোট ছোট পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত ছিল। এলাকার জনগণ তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সাহস পেত না। এর আগেও তাকে অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় অস্ত্র আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ সংক্রান্ত ২টি মামলা রয়েছে।
র্যাব তার বসত ঘর থেকে ১ টি ওয়ান শুটার গান, ২টি রামদা এবং ২টি ছোড়া উদ্ধার করে।
আটক তিন আসামি র্যাব আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্ত করেছে। বিজ্ঞপ্তি
Discussion about this post