চট্টগ্রাম, ২২ অক্টোবর, ২০২২:
নারায়াণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলা থেকে ময়মনসিংহে নেয়ার পথে চুরি হওয়া টিসিবির ১৫ হাজার ৮২০ লিটার সয়াবিন তেল চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির এক সৌদিপ্রবাসীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হামিদ পাড়া এলাকার সৌদিপ্রবাসী মুহাম্মদ নেজামের বাড়ি থেকে টিসিবির এ পণ্য উদ্ধার করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে। ফটিকছড়ি থানা পুলিশ তাদের সহযোগিতা করে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের টিসিবি পণ্যের পরিবেশক মুহাম্মদ আরিফ হোসেনের একটি ট্রাক ১৫ হাজার ৮২০ লিটার সয়াবিন তেল নিয়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। ঘণ্টাখানেক পর ট্রাকের চালক মুহাম্মদ মিজান (৩০) ফোন বন্ধ করে দেন। চালকের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে পরিবেশক আরিফ ওই গাড়িটি খুঁজে বের করার অনেক চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে গত বৃহস্পতিবার আরিফ নিজে বাদি হয়ে মামলা করেন। এরপর গত শুক্রবার বিকেলে পুলিশ ট্রাকচালক মুহাম্মদ মিজানকে গ্রেপ্তার করে। মিজানের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ অভিযানে নামে। শনিবার দুপুরে মামলার বাদিকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ ফটিকছড়ির ওই এলাকায় অভিযানে যায়।
আরিফ হোসেন বলেন, গত মঙ্গলবার বিকেলে আমার ট্রাকের চালক নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর সেতু পার হওয়ার পর ফোন বন্ধ করে দেন। সারা রাত ফোন বন্ধ পেয়ে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ সুপারের মাধ্যমে থানায় মামলা করি।
কাঞ্চননগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা আজ (শনিবার) সকালে পুলিশ থেকে ঘটনাটি জেনে পুলিশের সঙ্গে এসে উদ্ধার অভিযানে সহযোগিতা করেছি। দোতলা পাকা বাড়িটির ছয়টি কক্ষে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখা ছিল এসব তেল। তবে ওই বাড়ির পুরুষ সদস্যরা প্রবাসী হওয়ায় কাউকে পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জানায়, ওই সৌদিপ্রবাসীর বোনের জামাই মুহাম্মদ ওসমান গণি নামের এক তেল ব্যবসায়ী এসব পণ্য এখানে চুরি করে এনে লুকিয়ে রেখেছিলেন। তার বাড়ি ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দং ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। তবে শনিবার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
ফটিকছড়ি থানার এএসআই ইকবাল হোসেন বলেন, অভিযানে ১৫ হাজার ৮২০ লিটার তেল উদ্ধার করা হয়েছে। ওই চালানের ট্রাকচালক মুহাম্মদ মিজানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ অভিযান চালায়। এই ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, সেটা তদন্ত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে ভবন মালিক নেজামের ছোট ভাই আরমানকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে তার বড় বোন জানান, তেলের কার্টনগুলো তার স্বামী ওসমান ২-৩ দিন আগে গাড়ি করে নিয়ে এসে বাড়িতে সংরক্ষণ করে। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছুতো আমরা জানি না।
Discussion about this post