চট্টগ্রাম, ১ আগস্ট, ২০২৩:
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া শত শত ট্রলারের মধ্যে মঙ্গলবার, ১আগস্ট সকালে আকস্মিক বৈরি আবহাওয়ার কবলে পড়ে কুতুবদিয়া উপকূলে ১০টির অধিক ও ভোলার মেঘনা ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সাতটি জেলে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। ভোলার ঘটনায় ৬৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও এখনও নিখোঁজ ছয়জন। অন্যদিকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় ৩০ জেলে নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। কুতুবদিয়ায় ৩৮ জেলে অন্য ট্রলারের সাহায্যে জীবিত উদ্ধার হলেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১০টি ট্রলারসহ ৩০ জেলে নিখোঁজ ছিল।
বড়ঘোপ ইউপির চেয়ারম্যান আবুল কালাম, উত্তর ধুরুং ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মনছুর রাব্বি, কুতুবদিয়া উপজেলার মৎস্যজীবী ফেডারেশনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সূত্রে জেলে নিখোঁজ ও ট্রলার ডুবির খবর নিশ্চিত করেন। তরা জানান, বড়ঘোপ ইউনিয়নের অমজাখালী এলাকার মোক্তার আহমদের মালিকনাধীন ফিশিং ট্রলার ডুবে যাওয়ার পর ট্রলারে থাকা ১০ জেলে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ট্রলারের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। শাহাব উদ্দিনের মালিকানাধীন ফিশিং ট্রলারে থাকা ৮জেলে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে। দেলোয়ার হোসেন ভেট্টোর মালিকানাধী ফিশিং ট্রলার ডুবির ঘটনায় ১২ জেলের মধ্যে ১০ জেলে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, ট্রলারসহ ২ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। আনোয়ার হোসেনের মালিকানাধীন ফিশিং ট্রলারসহ ৮ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। খোরশেদ আলমের মালিকানাধীন ফিশিং ট্রলারসহ ১০ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের মিয়ারাকাটা এলাকায় আবদুল্লাহ আল নোমানের মালিকানাধীন ফিশিং ট্রলার ডুবে নিখোঁজ রয়েছে, তবে ১০ জেলে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া অনেক মাছ ধরার ট্রলার এখনো উপকূলে ফিরে আসেনি বলে নিশ্চিত করেন কুতুবদিয়া উপজেলা মৎস্য অফিস।
কুতুবদিয়া উপজেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন জানান, কুতুবদিয়া উপকূলের শত শত ট্রলার গত সোমবার সকালে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে বঙ্গোপসাগরে যায়। একদিন পর মঙ্গলবার সকালে সাগরে আকস্মিক বৈরি আবহাওয়া শুরু হলে সাগরে কুতুবদিয়া উপকূলের ১০টির অধিক ফিশিং ট্রলার ডুবে যায়। এসব ট্রলারের ৪০জেলে উদ্ধার হলেও এখনো ৩০ জেলে নিখোঁজ রয়েছে।
তবে স্থানীয় বড়ঘোপ ইউপির চেয়ারম্যান আবুল কালামের উদ্যোগে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারের জন্য সাগরে ট্রলার পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ট্রলার মালিক শাহাব উদ্দিন।
ভোলায় মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ছয়টি নৌকা নিম্মচাপের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ে এবং একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যায় বলে জানান মনপুরা থানার ওসি জহিরুল ইসলাম কামরুল ও ইলিশা নৌ-থানার পরিদর্শক মো. আখতারুজ্জামান।
এর মধ্যে বঙ্গোপসাগরে তিনটি, সাগরের মোহনায় দুইটি, দৌলতখানের মেঘনায় একটি এবং সদর উপজেলার তুলাতলি মেঘনা নদীর মাঝের চর সংলগ্ন এলাকায় একটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের জন্য আবহাওয়া অফিস স্থানীয় সতর্ক সংকেত নং ০৩ (তিন) দেখিয়ে যেতে বলা হয়। এবং চট্টগ্রাম নদী বন্দরের জন্য সতর্কবানীঃ ০২ (দুই) নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারী সংকেত দিয়েছে।
আজ ১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬ টা হতে আগামীকাল ২ আগস্ট পর্যন্ত এলাকা সমূহের জন্য আবহাওয়ার স্থানীয় পূর্বাভাসে বলা হয়েছে-আকাশ মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। সে সাথে- অধিকাংশ জায়গায় দমকা/ঝাড়ো হাওয়া বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাপমাত্রাঃ রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক হতে ঘন্টায় ১৫-২০ কি. মি. বেগে অথবা আরো অধিক বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। যা অস্থায়ী। পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১৫.৬ মি.মি.।