চট্টগ্রাম, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩:
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ এ (HAMOON) রূপ নেওয়ায় চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আবহওয়া অধিদপ্তর জানায়, হামুন উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় (১৯.৭° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.৭° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ (২৪ অক্টোবর ২০২৩) সকাল ৯ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কি.মি. পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কি.মি. পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এটি আরো উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আগামীকাল (২৫ অক্টোবর ) সকাল থেকে দুপুর নাগাদ ভোলার নিকট দিয়ে
বরিশল-চট্টগ্রাম উপকূল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে অতিক্রম করতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো
হাওয়ার আকারে ১৯০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ (সাত) নম্বর
বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত
দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৫ (পাঁচ) নম্বর বিপদ সংকেত
দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর,
চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ (আট) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে ততিভারি (২৮৯ মি.মি.) বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা,
পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও
‘চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতি ভারী (২৮
মিমি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের
কোথাও কোথাও ভূমি ধ্বস হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।