চট্টগ্রাম, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩:
বিজয়া দশমীতে দেবি দুর্গার নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে আজ সমাপ্ত হয়েছে পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গা পূজা।সাগরে নিম্নচাপের টিপটিপ বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে পূজারীরা প্রতিমা বিসর্জনের জন্য পতেঙ্গা সমুদ্রে ভিড় করে। পাশাপাশি
দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে মানুষের ঢল নামে। প্রতি বছরের মতো এবারও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনের এই আয়োজন করা হয়।
সন্ধ্যার মধ্যে যাতে বঙ্গোপসাগরে সুষ্ঠু ও শান্তি শৃঙ্খলার মধ্যে পূজারীগণ প্রতিমা নিরঞ্জন করতে পারেন সে লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে আলোকবাতি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সাজসজ্জা, মঞ্চ নির্মাণ, মাইকিং সহ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
অত্যন্ত নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দুপুর থেকেই পূজারী ও ভক্তরা শ্রদ্ধার সাথে তাদের প্রতিমা নিরঞ্জন দেবার জন্য গাড়িতে করে প্রতিমা নিয়ে আসেন। সুন্দর পরিবেশে সুশৃংখলভাবে প্রতিমা বিসর্জন করতে পেরে পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং হাজার হাজার পূজার্থী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুর থেকেই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে মহানগরীর প্রায় দুই শতাধিক মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে বলে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান।
এ উপলক্ষে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি যৌথ উদ্যোগে নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, চট্টগ্রাম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যতম পাদপীঠ। এই নগরীতে জাতিগত কোন ভেদাভেদ নেই। শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তি-শৃংখলার সাথে সম্পন্ন হওয়া তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
“শেখ হাসিনা দেশে সব ধর্মের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা যে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তার একটি প্রমাণ হল কোন সমস্যা ছাড়াই সারা দেশে পুজা উদযাপন হয়েছে। এজন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের যে অসাম্প্রদায়িকতার শিক্ষা দিয়েছেন, সে শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে অসাম্প্রদায়িকতা ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রার জন্য কাজ করতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল পাদপীঠ হিসেবে চট্টগ্রামের যে ঐতিহ্য তা রক্ষা করতে হবে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় কাজ করতে হবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে।
পরে মেয়র রেজাউল ও উপমন্ত্রী নওফেল প্রতিমা নিরঞ্জন কার্যক্রম তদারকি করেন৷
অনুষ্ঠানে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাবৃন্দ, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সংগঠকবৃন্দ এতে বক্তব্য রাখেন।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে ছাড়াও পাথরঘাটা গঙ্গাবাড়ি এলাকায় কর্ণফুলীতে, কালুরঘাট এলাকা, কাট্টলী রানী রাসমনি ঘাটে দেবি দুর্গার নিরঞ্জন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
Discussion about this post