চট্টগ্রাম, ২৫ অক্টোবর, ২০২৩:
ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজার ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। অন্তত দুই ব্যক্তি হামুনের তাণ্ডবে মারা গেছে। ঘণ্টায় ১০৪ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। গাছপালা ভেঙ্গে লণ্ডভণ্ভ হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা।
তবে ঘূর্ণিঝড় হামুনের মূল অংশ উপকূল অতিক্রম করছে বলে জানা যাচ্ছে। ৪-৬ ঘন্টার মধ্যে এটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের বুলেটিনে জানিয়েছে। আবহওয়া অধিদপ্তর জানায়,
উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ (HAMOON) উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (২১.৭° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১.৮° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি ২৪ অক্টোবর রাত ৯ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫ কি.মি. দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০ কি.মি. উত্তর-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬০ কি.মি. পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৭০ কি.মি. পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল। একই সাথে ঘূর্ণিঝড়টির মূল অংশের উপকূল অতিক্রম অব্যাহত রয়েছে। এটি আরো উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে কুতুবদিয়ার নিকট দিয়ে পরবর্তী ৪-৬ ঘন্টার মধ্যে চট্টগ্রাম-
কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো
হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৫ (পাঁচ) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ (সাত) নম্বর
বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের প্রভাবে
কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধ্বস হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
গতিপথ কিছুটা বদলে এ ঝড় চট্টগ্রামের দক্ষিণ অংশ ও কক্সবাজারের ওপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম শুরু করে।
এদিকে হামুন গতিপথ পরিবর্তন করে কক্সবাজারে তাণ্ডব চালিয়েছে। ৮০ কিমি. গতির ঝড়োহাওয়ায় গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে।শহরজুড়ে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। বিধ্বস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি। সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। বেড়েছে পানির উচ্চতা। উপকূলীয় এলাকা থেকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। প্রবল বাতাসে অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গেছে।প্লাবিত হয়েছে টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়ার অধিকাংশ এলাকা ।
Discussion about this post