চট্টগ্রাম, ৯ অক্টোবর, ২০২৪:
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রতিনিধিত্ব সরকার যখন একে একে বাতিল করেছে এমন সময়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের মত গুরুত্বপূর্ণ পদ অলঙ্কৃত করতে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডাক্তার শাহাদাত হোসেন।তাকে মেয়র ঘোষণা করে গত রাতে সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন।গত ১ অক্টোবর ডা. শাহাদাত হোসেনকে চসিক মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেয় চট্টগ্রামের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে নির্বাচন কমিশন ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরীকে মেয়র ঘোষণা করেছিল।
কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তৎকালীন সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী আর কার্যালয়ে আসেননি। মেয়রকে অপসারণ করে ১৯ আগস্ট চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। বর্তমান প্রজ্ঞাপন জারির প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করবেন ডাক্তার শাহাদাত হোসেন।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শাহাদাত হোসেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট পান। একই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ৯ জনকে বিবাদী করে মামলা করেছিলেন শাহাদাত। গত ১ অক্টোবর মামলার রায়ে ডা শাহাদাতের আইনজীবী মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির প্রমাণ পেয়েছেন আদালত। এ জন্য বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেনকে চসিকের মেয়র ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচিত হওয়ার ফলাফল বাতিল ঘোষণা করেন আদালত। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির আদেশও দেন রায় ঘোষণায়।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদের ক্ষেত্রে সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিব শফিউল আজিম মঙ্গলবার রাতে বলেন, আদালতের রায়ের পর আমরা আইনি দিকগুলো যথাযথভাবে যাচাই করেছি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদের ক্ষেত্রে সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
ইসির সংশোধনী বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের ১ অক্টোবরের আদেশে চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরীকে নির্বাচিত ঘোষণা বাতিল করে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী শাহাদাত হোসেনকে নির্বাচিত মেয়র ঘোষণা করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারির গেজেটে উল্লেখ করা নির্বাচনের ফলাফলের ১ নম্বর কলামের ১ নম্বর ক্রমিকের বিপরীতে ২ নম্বর কলামে ‘মো. রেজাউল করিম চৌধুরী’র পরিবর্তে ‘শাহাদাত হোসেন’ এবং ৩ নম্বর কলামে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের’ পরিবর্তে ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হলো।
Discussion about this post