চট্টগ্রাম, ২৮ এপ্রিল, ২০২২:
রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে ওয়াসার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। লক্ষ কোটি টাকা খরচ করেও দুটি প্রধান নগরীর বাসিন্দারা যেমন জলের কষ্টে ভুগছে তেমনি চট্টগ্রাম ওয়াসা নগরীর মানুষকে পর্যপ্ত পানি সরবরাহ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকায় ওয়াসার পানির কারণে গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকায় বিগত ২৫ বছরে এমন ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন সেখান বসবাসকারী নাগরিকরা। বিষয়টি আজ মন্ত্রী পরিষদ বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে। যেখানে এভাবে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ার নজির গত ২০/২৫ বছওে নেই বলে মতামত প্রকাশ করা হয়েছে। এমনকি যারা প্রবাসী বিদেশ যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরের আশেপাশের হোটেলগুলোতে উঠেছিল তারাও অনেকে ডায়ুরয়া আক্রান্ত হয়ে।ে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনির্ধারিত আলোচনা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রিসভার আজকের বৈঠকে ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৭৪ লাখ কলেরার টিকা দেবে পরিস্থিতি মোকাবেলায়। টিকা দিলে তিন বছর ডায়রিয়া বা কলেরার সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকা যাবে।
সাধারণত প্রতিবছর গরমের মৌসুমে ডায়রিয়া দেখা দিলেও এ বছর মার্চের মাঝামাঝি ব্যাপক ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মার্চ মাসে দেশে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার ২৩৭ জন রোগী। রেকর্ড পরিমাণ রোগী ভর্তি হয়েছেন আইসিডিডিআর,বির কলেরা হাসপাতালে। যা প্রতিদিন গড় ছিল প্রায় ১৩শ জনে রোগী। এমন কি কুয়েত, কাতার সহ উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো থেকে জানানো হয়েছিল ঢাকা যাওয়া কর্মীদেও অনেকে ডায়রিয়া নিয়ে সেসব দেশে গেছে।
ঢাকায় ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ওয়াসার পানির উৎসে ‘জীবাণু না থাকলেও’ বাসাবাড়ির রিজার্ভার এবং ‘বেআইনিভাবে লাইন টানার সময়’ ছিদ্র থেকে ব্যাকটেরিয়া ছড়াচ্ছে বলে জানান।
এদিকে পবিত্র রমজান মাসে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাচ্ছে পানি সঙ্কট। বহদ্দার হাট, চান্দগাঁও, পূর্ব মাদারবাড়ি, মোহরা চররাঙামাটিয়া, উত্তর কাট্টলি সহ পানি সঙ্কট চলছে। এতে নানা পানি বাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। অন্যদিকে এসব এলাকার মানুষ পানির জন্য হাহাকার করছে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশরী রানা চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, পানি সঙ্কটের ব্যাপারে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের এলাকার সঙ্কট নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু চট্টগ্রাম নগরবাসীর প্রশ্ন হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসা যেখানে চট্টগ্রামে অদূও ভবিষ্যতে আর পানি সঙ্কট হবে না বলে বার বার আশ্বস্থ করেছেন, সেখানে বর্তমান সঙ্কট আসলে ওয়াসার সক্ষমতা কোন পর্যায়ের তা নিয়ে নগরবাসীর নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
Discussion about this post