চট্টগ্রাম, ১২ মে, ২০২২:
চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলীতে গত ৭ মে প্রকাশ্যে লাঠি ও রড দিয়ে পিটিয়ে ব্যবসায়ী ফরিদ হত্যা মামলার ২ আসামিকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তারা হলেন মোঃ আলী আজগর লেদা (২৫) ও ২। মোঃ ইসমাইল হোসেন (৩০)। ফরিদ হত্যাকা-ের পর গত ৮ মে নিহতের বোন বাদি হয়ে নগরের ডবলমুরিং থানায় মামলাটি দায়ের করেন। সেখানে ফরিদ হত্যায় জড়িত ১১ জনকে আসামি করা হয়।
দুই আসামিতে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে র্যাব-৭ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নিহত ভিকটিম ফরিদ চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলী রেলওয়ে কলোনীতে কার ওয়াশের ব্যবসার পাশাপাশি রেলওয়ের জায়গায় দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েও আয় রোজগার করতেন।। দোকান ভাড়ার টাকা আদায় নিয়ে জনৈক ব্যক্তি আলাউদ্দিন আলো এবং দিদারুল আলম প্রকাশ টেডি আলম এর সাথে বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত বিরোধের জের ধরে আলাউদ্দিন আলো এবং দিদারুল আলম প্রকাশ টেডি আলম ফরিদের নিকট হতে বিভিন্ন সময় চাঁদা দাবি করে আসছিল। ফরিদ চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হলে সে সময় উল্লেখিত ব্যক্তিদ্বয় প্রাণে হত্যাসহ যে কোন ক্ষতি করবে বলে হুমকি দেয়। গত ৭ মে রাত আনুমানিক সোয়া ১১টার দিকে ফরিদ পাহাড়তলী এলাকার একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করার সময় জানতে পারে তাকে মারার জন্য একদল দুষ্কৃতিকারী তাকে ধাওয়া করছে। তখন ফরিদ প্রাণে বাঁচার ভয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে পাহাড়তলী বাজার রেলস্টেশনের প্রবেশ পথে পৌঁছালে দুষ্কৃতিকারী পূর্ব শত্রুতা বশত পরিকল্পিতভাবে তাকে ঘেরাও করে তাদের হাতে থাকা কাঠের বাটাম, স্ট্যাম্প, লাঠি, ইটের টুকরা, কিরিচ, রড, ধারালো ছোরা এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এ সময় ফরিদ বাঁচার জন্য তাদের কাছে অনেক আকুতি মিনতি এমনকি প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও তার কথায় দুষ্কৃতিকারীদের মন গলেনি একটুও। পরবর্তীতে আশপাশের লোকজনের সহায়তায় তার স্ত্রী গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৮ মে রাতে তিনি মারা যান।
র্যাব জানায়, ফরিদ মারা যাবার পর থেকে চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক এই হত্যাকা-ের আসামিদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব-৭ চট্টগ্রাম বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, উক্ত মামলার এজাহারনামীয় ২ জন আসামি আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেফতার এড়াতে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম এবং চান্দিনা থানা এলাকায় আত্মগোপন করে রয়েছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১১ মে সাড়ে নয়টায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব ২ আসামিকে গ্রেপ্তারের পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের ডবলমুরিং থানায় হস্তান্তর করেছে।
Discussion about this post