চট্টগ্রাম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২:
সাম্প্রতিক কালে বঙ্গোপসাগরে ১৬ টি জেলে নৌকা ডাকাতির ঘটনায় সরাসরি জড়িত ১২ জন জলদস্যুকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম। গভীর সমুদ্রে এবং বাঁশখালীতে ৪৮ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান শেষে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র সহ দেশীয় অস্ত্র, তিন হাজার পিসের অধিক ডাকাতিককৃত ইলিশ মাছ, বিপুল পরিমাণ মাছ ধরার জাল ও ডাকাতের কাজে ব্যবহৃত নৌকা জব্দ করেছে ডাকাতদের কাছ থেকে।
র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. ইুরুল আবছার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতের্ রাব জানায়, গত ২৭ আগস্ট চট্টগ্রামের অন্তর্ভুক্ত সাগর এলাকায় ৯টি মাছ ধরার বোটে ডাকাতি সংঘটিত হলে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিশেষ সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, জলদস্যু বহনকারী ১টি বোট কর্তৃক সাগরে বিভিন্ন বোটে ডাকাতি করা হচ্ছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল এম এ ইফসুফের নেতৃত্বে ২টি চৌকষ আভিযানিক দল ও র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার একটি আভিযানিক দলের সমন্বয়ে গভীর সমুদ্রে গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ২ টা হতে আজ ১০ সেপ্টেম্বর ২ টা পর্যন্ত প্রায় ৪৮ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান পরিচালনা করে দস্যুতার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ১২ জন জলদস্যুকে আটক করতে সক্ষম হয়। আটককৃত জলদস্যুরা হল- ১। আনোয়ার ২। লিয়াকত (মাঝি), ৩। মনির, ৪। আবুল খায়ের (ইঞ্জিন ড্রাইভার), ৫। নবীর হোসেন, ৬। নেজামউদ্দিন, ৭। হুমায়ুন, ৮। সাহেদ, ৯। সাদ্দাম, ১০। আতিক, ১১। এমরান, এবং ১২। আমানউল্লাহ। তারা সকলে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বাসিন্দা।
আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে র্যাবের কাছে তারা সমুদ্রে বিভিন্ন বোটে ডাকাতি করে বলে স্বীকার করে। পরে তাদের কাছ থেকে ১টি বোট, আনুমানিক ৩,০০০ পিস ইলিশ মাছ, মাছ ধরার রড় জাল, ৩টি ওয়ান শুটারগান, ১টি চাইনিজ কুড়াল, ১৬টি দা ও ছুরি, ১টি বাইনোকুলার, ৪টি টর্চ লাইট, ২টি চার্জ লাইট, ২টি হ্যান্ড মাইক, ৭০ টি মোবাইল, নগদ ৫,৭০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ঈরে ১২ জন জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, বোটের মালিক আনছার মেম্বার জেলে মাঝিদের কম মাছ পাওয়ায় বোটের সদস্যদের কোন টাকা-পয়সা না দিয়ে তাদের মাছ ধরতে না পারলে ডাকাতি করে মাছ নিয়ে আসতে বলে। এই কাজে আনসার মেম্বার নিজের ছেলেকে সমুদ্রে জলদস্যুদের সর্দার বানায়। বোট ডাকাতি করার জন্য সাগরে পাঠায়। জলদস্যুদের এই দলটি সর্বমোট ১৬টি বোট ডাকাতি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ৭টি ও ইতিপূর্বে তারা ৯টি মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতি করে।
আসামিদের মধ্যে ডাকাত সর্দার আনোয়ারের বিরুদ্ধে ৩টি ও অন্যদের বিরুদ্ধেও চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানায় জলদস্যুতা, সস্ত্রাসী, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, হত্যাচেষ্টা এবং অপহরণে জড়িত থাকার মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারের পর ১২ জলদস্যুকে চট্টগ্রাম মহানগরের পতেঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Discussion about this post