চট্টগ্রাম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২:
প্রতিদিন চট্টগ্রাম মহানগরীর মানুষ ৩০০ টন বর্জ্য সৃষ্টি করে যার মধ্যে ২৪৯ টন প্লাস্টিক বর্জ্য। যার ৫৬ শতাংশ (১৪০টন) রিসাইক্লিংয়ের জন্য সংগ্রহ না করায় নগরীর খাল নালা পরিবেশ প্রতিবেশের সাথে মিশে পৃথিবী মানুষের বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। এই প্লাস্টিক পলিথিনের কারণে বাড়ছে জলাবদ্ধতা, পানি দূষণ, পরিবেশ দূষণ, মানুষের স্বাস্থ্যগত সমস্যা। প্লাস্টিক পলিথিন নদী ও সাগরে মিশে ধ্বংস হচ্ছে সাগর, নদী, খাল-বিলের মৎস্যসম্পদ। এই পলিথিন প্লাস্টিক বৃহৎ জলজ প্রাণী তিমিরও মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১০ সেপ্টেম্বর, শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সুলতান আহমদ হলে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ও বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম আয়োজিত গবেষণা প্রবন্ধে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
চুয়েট ভিসি (প্রাক্তন) প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি গবেষণা প্রবন্ধের মডারেটর চুয়েট প্রফেসর ড. স্বপন কুমার পালিত, সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী, সহ-সভাপতি লোকমান দয়াল, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক আলীউর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দাশ, অধ্যাপক মনোজ কুমার দেব, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম পেয়ার আলী সদস্য জসিম উদ্দিন, সঞ্চয় দেব প্রমুখ।
চুয়েট ছাত্র প্রকৌশলী পিয়াল বড়–য়া ও প্রকৌশলী আল আমিন প্রফেসর ড. স্বপন কুমার পালিতের তত্ত্ববধানে গত এক বছর ধরে নগরীর বাকলিয়া, চান্দগাও, মুরাদপুর, চকবাজার, খাতুনগঞ্জ, আগ্রাবাদ, সিইপিজেড সহ পনের ওয়ার্ডে এই গবেষণা কাজ পরিচালনা করেন। গবেষণায় সার্বিক সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম।
গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, যত্রতত্র প্লাস্টিক ছুড়ে ফেলা, পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকা, প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের অভাব, প্লাস্টিক পুড়ানো, প্লাস্টিক দূষণের কারণ সম্পর্কে অজ্ঞতা, অপচনশীলতা ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্লাস্টিক বর্জ্যে দূষণ দিন দিন বাড়ছে।
প্লাস্টিক দূষণের কারণে খাবার, পানি পান, নিশ্বাসের সাথে মাইক্রোপ্লাস্টিক আমাদের দেহে প্রবেশ করছে। প্লাস্টিক পলিথিনের সাথে থাকা ক্যামিক্যাল এডিটিবস মানুষের শরীরে ঢুকে ক্যান্সার, বন্ধ্যাত্ব এবং অটিজমের মতো রোগ সৃষ্টি করছে। প্লাস্টিক পলিথিন বর্জ্য পরিবেশ এসে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার (প্যাথোজেন) মতো অনুজীবকে আকর্ষণ করে যা পরবর্তীতে প্যাথেজেন ধারণকারী মাইক্রোপ্লাস্টিককনা মানব শরীরে প্রবেশ করে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
গবেষণা প্রবন্ধে আরো জানানো হয়, ৩০ শতাংশ মানুষ প্লাস্টিক পলিথিনের পুনর্ব্যবহার করে, ৪৬ শতাংশ মানুষ কখনও প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার করে না, ১১ শতাংশ মানুষ কখনো পুনর্ব্যবহার করে।
গবেষণায় বলা হয়, সড়ক কার্পেটিং এ বিটুমিনের সাথে ৫-১০ শতাংশ প্লাস্টিক পলিথিন মেশানোর ফলে পরিবেশ দূষণ কমবে, প্রতি কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিং এ দুই লক্ষ পঁচাত্তর হাজার টাকা সাশ্রয় হবে সেই সাথে তৈরি সড়ক দ্বিগুণ স্থায়ী হবে। সূত্র: প্রেস বিজ্ঞপ্তি
Discussion about this post