চট্টগ্রাম, ৮ অক্টোবর, ২০২২:
আইস বাংলাদেশে এনে আবার টেকনাফ-উখিয়া সীমান্ত দিয়ে পাচার হচ্ছে অন্য দেশে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, মাদক মাফিয়ারা ক্রিস্টাল মেথ পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে বাংলাদেশকে
কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়া সীমান্তে বছরখানেক ধরে একের পর এক জব্দ হচ্ছে শতভাগ মেথাম্ফিটামিনযুক্ত ভয়ঙ্কর মাদক ক্রিস্টাল মেথ বা আইসের ছোট-বড় চালান। গত নয় মাসেই জব্দ হয়েছে আনুমানিক হাজার কোটি টাকার আইস।
সর্বশেষ গতকাল শনিবার ভোরেও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি টেকনাফের নাফ নদীতে অভিযান চালিয়ে দশ কোটি টাকা বাজারমূল্যের দুই কেজি একশ’ ২০ গ্রাম আইস জব্দ করেছে।
সূত্র জানায়, সীমান্ত দিয়ে উচ্চ মূল্যের আইসের চালান আসার পরিমাণ বছরের ব্যবধানে কয়েকগুণ বাড়লেও দেশের মাদকের বাজারে তার ব্যবহার এখনও অনেকেটাই কম। দাম বেশি হওয়ার কারণে এ মাদকের ব্যবহার এখনও উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। চাহিদা কম হওয়া সত্ত্বেও সীমান্ত পেরিয়ে বানের ¯্রােতের মত আইসের চালান দেশে নিয়ে আসার কারণ বা উদ্দেশ্য ভিন্ন। মূলত ভিন দেশে পাচারের জন্যই একের পর এক আইসের চালান দেশে নিয়ে আসছে মাদক পাচারকারী চক্র। যে কারণে মাদক মাফিয়ারা টেকনাফ-উখিয়া সীমান্তকেই ক্রিস্টাল মেথ পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে।দেশে এখন পর্যন্ত জব্দকৃত আইসের চালানগুলো থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার হয়ে ঢোকার তথ্য রয়েছে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মুজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ইয়াবার চালান নিয়ে আসার রুটকেই ক্রিস্টাল মেথ বা আইস পরিবহনেও ব্যবহার করছে মাদক কারবারিচক্র। ইতিপূর্বে আইসসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদেও সেরকম ইঙ্গিতই মিলেছে। এ কারণে এই রুটের বিভিন্ন পয়েন্টে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে ক্রিস্টাল মেথ বা আইস উচ্চমূল্যের মাদক। এখন পর্যন্ত উচ্চবিত্ত ও অভিজাত শ্রেণির মধ্যে এটির চাহিদা সীমাবদ্ধ রয়েছে।
ডিএনসি’র ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যে পরিমাণ আইস দেশে ঢুকছে তা চাহিদার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। তার মানে, ভয়ঙ্কর এই মাদক দেশের ভুখ- ব্যবহার করে বিদেশে পাচার হচ্ছে। আর স্বর্ণ চোরাকারবারি চক্রের মত আন্তর্জাতিক মাদক মাফিয়ারা টেকনাফ-উখিয়া সীমান্তকে ক্রিস্টাল মেথ পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। এখান থেকেই হয়তোবা এ মাদকের চালান বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়ে থাকতে পারে।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, গত দেড়-দুই বছরে ইয়াবার পাশাপাশি সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে ক্রিস্টাল মেথ বা আইস আসার পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়েছে। এ কারণে চোরাই পণ্য জব্দের তালিকায় উপরের দিকে উঠে এসেছে ক্রিস্টাল মেথ। এ কাজে মাদক মাফিয়ারা রোহিঙ্গাদেরও ব্যবহার করছে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।