চট্টগ্রাম, ১৬ অক্টোবর, ২০২২:
চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে উদ্বোধন করা হবে টানেল। এজন্য এখন চলছে টানেলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। আড়াইশ প্রকৌশলী এবং প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক মিলে শেষ মুহূর্তের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
টানেলের উভয় টিউবে লেন স্লাব নির্মাণ কাজও প্রায় শেষের দিকে। শেষ পর্যায়ে কর্ণফুলী টানেলের পতেঙ্গা এবং আনোয়ারা প্রান্তের সংযোগ সড়কের কাজও। উভয় প্রান্তে মোট ৫.৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের মধ্যে আনোয়ারা প্রান্তেই রয়েছে ৪ কিলোমিটার। চার লেনের এই সংযোগ সড়কের এক পাশের কাজ শেষ।
টানেলের মূল অংশ পতেঙ্গা বিমানবন্দর এলাকা দিয়ে ঢুকে আনোয়ারার কাফকো ইন্ডাস্ট্রি এলাকায় বের হবে। মাঝখানে সিইউএফএলের সার সরবরাহের ব্যারেল থাকায় টানেলের মুখ থেকে জালিয়াঘাটা পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৭২৭ মিটার ফ্লাইওভারের কাজও শেষ। ফ্লাইওভারের প্রবেশমুখে বসানো হয়েছে নৌবাহিনীর চেকপোস্ট। ফ্লাইওভারের ঠিক নিচে নির্মাণ করা হচ্ছে টোল প্লাজা।
কর্ণফুলি টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, টানেলের পরে এখন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেকানিকেল কাজ চলছে। এর মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক সিস্টেম সমন্বয় করা। এছাড়া টিউবের মধ্যে দুর্ঘটনা এড়াতে এক টিউব থেকে অপর টিউবে যাওয়ার জন্য তিনটি ক্রস প্যাসেজ বানানো হচ্ছে। সংযোগ সড়কের আনোয়ারা প্রান্তে চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। এজন্য গাছের চারা ও ঘাস লাগানোর কাজ চলছে। প্রায় দেড়মাস ধরে চলছে এসব কাজ।
বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ চৌধুরী পিসিএলকে আরও বলেন, টানেলের মূল কাজ প্রায় শেষ। এখন ফায়ার ফাইটিংসহ মেকানিক্যাল কিছু কাজ চলছে। সেই সঙ্গে দুটি টিউবের মধ্যে ক্রস প্যাসেজের কাজ চলমান রয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য, ৩৫ ফুট প্রশস্ত, ১৬ ফুট উচ্চতার টানেল টিউবে যান চলাচলের জন্য প্রায় সব কাজ শেষ। আগামী ডিসেম্বরে টানেলটি চালু করার কথা রয়েছে।
সূত্র জানায়, দুটি টিউবের কোনো একটিতে দুর্ঘটনা ঘটলে সহজে যাতে অপর টিউবে চলে যাওয়া যায় সেজন্য তিনটি ক্রস প্যাসেজ তৈরি করা হচ্ছে। মূল টানেলের টিউব বোরিং মেশিনের মাধ্যমে করা হলেও আন্তঃসংযোগের তিন ক্রস প্যাসেজ করতে হচ্ছে ফ্রিজিং (কৃত্রিম জমাট বাধানো) পদ্ধতিতে। এ কাজ বেশ চ্যালেঞ্জিং। তিন প্যাসেজের মধ্যে দুইটির কাজও এর মধ্যে শেষ। অপরটির কাজ চলছে। এই পথ দিয়ে কোনো গাড়ি চলবে না। কোনো দুর্ঘটনা হলে কেবল তখনই একটি থেকে অন্যটিতে যেতে ব্যবহার হবে।
জানা গেছে, নদীর তলদেশে টানেলের সাড়ে ৩ কিলোমিটার পথে গাড়ির সর্বোচ্চ গতি হবে ৮০ কিলোমিটার। এই গতিতে ৫/৬ মিনিটে শহর প্রান্তের পতেঙ্গা নেভাল থেকে নদী পার হয়ে চলে যাওয়া যাবে আনোয়ারা প্রান্তে।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ সম্পন্ন হচ্ছে। ছবি: সংগ্রহ