চট্টগ্রাম, ২৪ অক্টোবর, ২০২২:
ঘৃর্ণিঝড় সিত্রাং আজ সোমবার সন্ধ্যায় উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার এনামুর রহমান এমপি। তিনি বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়টি সিভিয়ার সাইক্লোনে রূপান্তরিত হয়েছে। সিত্রাং পুরোটাই বাংলাদেশে আঘাত হানবে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত
কাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে এটি উপকূল অতিক্রম করবে।
সিত্রাংয়ের প্রভাবে চট্টগ্রামে তেমন কোনো বৃষ্টি-বর্ষণ না থাকলেও সারাদিন মেঘলা আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি। আজ ২৪ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত মাঝে মাঝে কোথাও কোথাও ক্ষণিকের জন্য হালকা বৃষ্টি হলেও তা আবার থেমে গেছে। তবে সকালের দিকে একটু চেপে বৃষ্টি নামলেও তাও বেশিক্ষণ ছিল না। তবে দেশের কোথাও বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস প্রবাহের খবর পাওয়া যায়নি।
তবে সিতরাং মোকাবেলায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ কন্ট্রোল রুম খুলেছে। যে কোনো প্রয়োজনে ০১৩২০-১০৮৩৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। আর ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেও ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সমস্যায় সহায়তা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে,
পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্যবঙ্গোসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় সিতরাং উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ সকাল ছয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে৫৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয় আগামীকাল ২৫ অক্টোবর ভোর রাত অথবা সকালে খেপুপাড়া নিকট দিয়ে চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে 88 কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর সমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী; ভোলা, বরিশাল; লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরসমূহকে তিন নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝড়োবাতাস বয়ে যেতে পারে। সেইসাথে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা খুলনা বাগেরহাট ঝালকাঠি পিরোজপুর বরগুনা পটুয়াখালী ভোলা বরিশাল লক্ষীপুর চাঁদপুর নোয়াখালী ফেনী চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে এসেছে ৫ থেকে ৮ফুটের অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে সিতরাং মোকাবেলা চট্টগ্রাম জেলার জন্য ২৯০ টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ইলিয়াস চৌধুরী।
Discussion about this post