চট্টগ্রাম, ২৪ অক্টোবর, ২০২২:
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে সারাদেশে অন্তত ৮ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যার পর পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও চট্টগ্রামের মাঝামাঝি অংশ দিয়ে বাংলাদেশ আঘাত হানে। এরপরে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ভোলা, বরিশাল ককক্সবাজারে আছড়ে পড়ে তাণ্ডব চালায়। এই সময় প্রবল ঝোরো হাওয়া ও বৃষ্টিতে উপকূলীয় জেলাসমূহ লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৬২ কি.মি. যা ধমকা ও ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি বৃদ্ধি পাচ্ছিলো।তখন সাগর উত্তাল হয়ে উঠে। একই সাথে ৯ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়। অমাবস্যা তিথির জোয়ার যুক্ত হয়ে ব্যাপক জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ৮ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছে অনেকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ আঘাত হানার পর ঝড়ের কেন্দ্র মধ্যরাত নাগাদ উপকূল অতিক্রম করে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট ঝোড়ো বাতাসে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে ঝড়ের গতিবিধি লক্ষ্য করে আবহওয়া দপ্তর চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেয়। তবে ঘূর্ণিঝড়টি সিত্রাং রাত ৯ টার পর ভোলার কাছ দিয়ে বরিশাল ও চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলের নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বসতঘরে পানি ঢুকেছে। প্রশাসনের তৎপরতায় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে উপকূল ও নিম্নাঞ্চলের লাখো মানুষ।ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ভারি বর্ষণ ও ঝোড়ো বাতাসে উপকূল অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে। এর ফলে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান বিপদ এড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় ৪৫ লাখ ২৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।ঘূর্ণিঝড়কবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরিশাল, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও নোয়াখালী জেলা এবং ওই এলাকার দ্বীপ ও চরগুলোকেও ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে অভ্যন্তরীণ তিনটি এয়ারলাইন্স- বিমান বাংলাদেশ, ইউএস-বাংলা এবং নভো এয়ার অভ্যন্তরীণ ৬টি রুটে আপ-ডাউন মিলিয়ে ৬০টি ফ্লাইট বাতিল করেছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সেন্টমার্টিনের ছেড়া দ্বীপে একটি বিদেশি জাহাজ ভেসে এসেছে। ছবি: সংগৃহীত
Discussion about this post