চট্টগ্রাম, ২৭ অক্টোবর, ২০২২:
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি- স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড, ইস্টার্ণ ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) ও ভিসার সহযোগিতায় কো-ব্র্যান্ড কার্ড-সহ স্টার্টআপদের জন্য বিশেষ ঋণ (লোন) প্রোডাক্ট চালু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত ইবিএল প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরষ্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরাণ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে এবং বাংলাদেশকে ডিজিটাল স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করার জন্য তার দূরদর্শী চিন্তাধারা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের মতো বিশ্বের আর কোনো দেশ এত অল্প সময়ের মধ্যে ডিজিটালাইজড হয়নি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্টার্টআপ এবং নতুন উদ্ভাবনী ধারণার জন্য একটি সমৃদ্ধ ক্ষেত্র হয়ে উঠছে যা স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে রূপান্তরিত করছে। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা অনুসারে, বাংলাদেশে বর্তমানে ১২০০ টিরও বেশি সক্রিয় স্টার্টআপ রয়েছে এবং প্রতি বছর ২০০টি নতুন স্টার্টআপ ইন্ডাস্ট্রিতে যোগ দিচ্ছে। এই ক্রমবর্ধমান সংখ্যক স্টার্টআপগুলো আমাদের তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করছে। পলক আরো বলেছেন, প্রতি বছর আমাদের দেশের মধ্যম ও উচ্চ-মধ্য আয়ের মাধ্যম থেকে হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েট এই স্টার্টআপগুলোতে তাদের কর্মজীবন শুরু করছে। হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জনের পর তারা উদ্যোক্তা হিসাবে বিকশিত হচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোস্তফা ওসমান তুরাণ বলেন, স্টার্টআপগুলো সমাজে চেঞ্জ-মেকার এবং প্রভাবকের ভুমিকা পালন করে। একটি কর্মচঞ্চল স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরির স্বার্থে সরকারি এবং বেসরকারি খাতের একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রোগ্রামের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ পার্টনারশিপ গঠনের জন্য আমি আইসিটি ডিভিশন এবং ইবিএলকে অভিনন্দন জানাই।
ইবিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ইবিএল ইনোভেশন এবং টেকনোলজিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তাই যারা বা যেসকল সংস্থা বাংলাদেশের ডিজিটাল রুপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে সহযোগিতাকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত স্টার্টআপ বাংলাদেশ দেশের প্রথম এবং একমাত্র ভেঞ্চার ক্যাপিটাল তহবিল। দেশের ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরিতে স্টার্টআপ বাংলাদেশ যে ভূমিকা পালন করছে তা অনুপ্রেরণাদায়ক। এই অবকাঠামোকে ভিত্তি করেই দেশে প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের বিকাশ ঘটবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ। তিনি বলেন, স্টার্টআপ ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োগের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল সুযোগ রয়েছে। স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার জন্য এবং একটি টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধও যাতে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের পরবর্তী স্টার্টআপ হাব হিসাবে স্থান করে নিতে পারে।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের স্টার্টআপদের জন্য যে ঋণ প্রোডাক্টটি উদ্বোধন করা হয়েছে তার নাম ‘স্টার্টআপ এক্সপ্লোরার’’। বাংলাদেশের স্টার্টআপদের জন্য এই প্রোডাক্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসির অংশ হিসেবে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত এই ঋণ পেতে পারে স্টার্টআপরা। এটি স্টার্টআপগুলোকে তাদের কার্যক্রম বৃদ্ধিতে অনেক উপায়ে উপকৃত করবে।
অপরদিকে, ক্রেডিট, ডেবিট এবং প্রি-পেইড এই তিন ধরণের কার্ড ইস্যু করা হবে। কো-ব্র্যান্ড কার্ডগুলোতে বিশেষ কিছু সুবিধা অফার করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে প্রথম বছরে ‘জিরো’ ইস্যু ফি, আঠারোটি লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘জিরো’ নবায়ন ফি, দুটি সাপ্লিমেন্টারি কার্ড ইত্যাদি। দেশে ও বিদেশে এই কার্ডগুলো ব্যবহার করা যাবে।
এছাড়াও ফ্রিল্যান্সার হিসেবে যারা কাজ করছেন তাদের জন্য ইবিএল ফ্রিডম ফ্রিল্যান্সার ভিসা ডেবিট কার্ড অফার করছে ইস্টার্ণ ব্যাংক। এই কার্ড ব্যবহারের ফলে ফ্রিল্যান্সারদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবস্থাপনা অনেক বেশি সহজ ও কার্যকর হবে।
পরে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী এবং তুরষ্কের রাষ্ট্রদূত উক্ত নতুন কার্ড এবং ঋণ প্রোডাক্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এসময় উক্ত অনুষ্ঠানে উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি
Discussion about this post