চট্টগ্রাম, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩:
রেল ভ্রমণে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
এক বিবৃতিতে ক্যাব জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপদ ও সহজ গণপরিবহন হলেও বিগত সরকারগুলোর রেলওয়ের উন্নয়নে মনোযোগ না থাকায় রেলপথ যেভাবে উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ হবার দরকার ছিলো তা হয়নি। অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ যাত্রীর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও টিকেট না পাওয়া, মন্ত্রণালয়ের লোকজন যাত্রী/ভোক্তাদের ভোগান্তি, হয়রানি ও অনিয়মের কথা শুনার সময় পাচ্ছে না। সেকারণে গতানুগতিক পন্থায় গ্রাহক অভিযোগ গ্রহণ, গ্রাহক সেবা কেন্দ্রগুলোর দুরাবস্থা ও অকার্যকারিতা, একইসাথে টিকেট কালোবাজারীদের সাথে রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আতাঁতের কারণে যাত্রী হয়রানি বন্ধ হচ্ছে না।
তারা বলেন, সাধারণ জনগণ যখন নিত্যপণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধিতে চরমভাবে নাজেহাল সেখানে রেলওয়ের সেবা না বাড়িয়ে ও ভোগান্তি নিরসন না করে ২৫ জানুয়ারি থেকে শোভন চেয়ার শ্রেণির ৩৮০ টাকার ভাড়া নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০৫ টাকা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কোচে আসনপ্রতি ভাড়া ৭০ টাকা বাড়িয়ে ৬৩০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা আদায় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দ।
সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাব নেতৃবৃন্দ এই বিবৃতি দিয়েছে।
২৮ জানুয়ারি গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান প্রমুখ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, রেলপথ যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলেও যাত্রীর স্বার্থ রক্ষায় রেল কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা, অনীহা, রেল বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সীমাহীন অনিয়ম-দুনীর্তিকে অব্যাহত রাখার জন্য রেল বিভাগ যাত্রী সেবার মান উন্নয়নে আন্তরিক নয়। যার কারণে রেলের ভাড়া দ্বিগুণ করা হলেও সেবার মান বাড়েনি। আর রেল ব্যবস্থাপনায় ভোক্তাদের কোন অংশগ্রহণ গুরুত্বই পায়নি। অভিযোগ প্রতিকারে ঢাবি’র শিক্ষার্থীদের লাগাতর ধর্মঘট ডাকলেও পরিস্থিতির কোন উন্নয়ন হয়নি। এমনকি মান্দাতার আমলের সেই কোটা পদ্ধতি, টিকেট বিক্রয়ে সিন্ডিকেট প্রথা অব্যাহত আছে। যার কারণে রেলের টিকেট যাত্রীদের জন্য সোনার হরিণ হলেও কালোবাজারীদের কাছে অতিসহজলভ্য হয়ে আছে। অনলাইনে টিকেট ছাড়ার পর সবগুলো বিক্রি দেখালেও ট্রেন ছাড়ার পর অনেক সিট খালি থাকে এবং লোকসানের সব দায়ভার রেলওয়ের কাঁধে চাপে।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, সরকারের সদিচ্ছার কারণে রেলপথ মন্ত্রণালয় পৃথক মন্ত্রী পেলেও কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত হয়নি। তাই অবিলম্বে রেলপথে যাত্রী হয়রানি, ভোগান্তি ও অনিয়ম রোধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিকারের ডিজিটাল গ্রাহক সেবা কেন্দ্র (প্রয়োজনে প্রতিকার না পেলে ডিজি, মন্ত্রী, সচিবকে অবহিত করা যায় এমন ব্যবস্থা), বর্তমান টিকেট বিক্রয় ব্যবস্থাকে আরও আধুনিকায়ন ও ঢেলে সাজানো, কোটাপদ্ধতি বাতিল, যাত্রীদের জন্য টিকেট প্রাপ্তি সহজলভ্য করা, যাত্রী সেবার অনিয়ম রোধে রেলে তাৎক্ষণিক গ্রাহক সেবা কেন্দ্র/হেলপ লাইন চালু, সিদ্ধান্ত প্রদানে সক্ষম ও যোগ্য প্রতিনিধিকে রেলস্টেশনে অবস্থান নিশ্চিত করে সপ্তাহে অন্তত ১দিন গণশুনানির আয়োজন করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রেলপথের সেবা ও ব্যবস্থাপনায় নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে ভোক্তা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানায় ক্যাব। বিজ্ঞপ্তি
Discussion about this post