বিষয় কিশোর অপরাধ। এখানেই দেখা দিয়েছে সমস্যাটা- ‘কিশোর অপরাধের শাস্তি দণ্ডবিধিতে আছে এক রকম। আবার শিশু আইনে আরেক রকম। আবার শ্রম আইনে আছে আর এক রকম। এসব আইনের মধ্যে একটা সামঞ্জস্য আনা দরকার।’- এ কথাটা বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন।
ঢাকার মগবাজার মধুবাগে বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কমপ্লেক্সে কিশোর অপরাধবিরোধী সামাজিক প্রচার কার্যক্রমের অংশ হিসাবে র্যা বের তৈরি একটি টিভি বিজ্ঞাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।
সেই অনুষ্ঠানে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সবাইকে শিশু ধরায় কিশোর অপরাধ দমনের কাজটি বিঘ্নিত হচ্ছে বলে দাবি তারা এসব কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমাদের আজকে মনে হচ্ছে এই ১৮ বছর সময়সীমাটা চিন্তা করার সময় এসেছে। যদিও আমরা আন্তর্জাতিক একটা আইনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, সেই জায়গাটিতে আমাদের করণীয় কী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেটা চিন্তা করবেন। সেই জায়গা থেকে দেখার বিষয় রয়েছে বলে আমি মনে করি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদও বলেন, ১৮ বছরে কিন্তু আমাদের দেশে ছেলে-মেয়েরা পূর্ণ যুবকের পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তাকেও কিন্তু এখন শিশু হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ কারণেই কিশোর গ্যাংদের বিরুদ্ধে যেভাবে আগে আমরা আইন প্রয়োগ করেছি এখন সেভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না।
সভায় র্যােবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, শিশু আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের কমবয়সী যে কাউকে গ্রেপ্তারের পর প্রবেশন অফিসারের জিম্মায় দিতে হবে। এই প্রবেশন অফিসারের কাছে দেওয়া নিয়ে প্রায়ই বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। উপজেলা পর্যায়ে একটা ছেলেকে গ্রেপ্তারের পর সঙ্গে সঙ্গেই একজন প্রবেশন কর্মকর্তাকে হাতের কাছে পাওয়া বেশ জটিল ও কঠিন বিষয়।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীরও বলেন, “মুশকিল হচ্ছে যে বাংলাদেশে কোথায় কোন প্রবেশন অফিসার আছে, তা আমরা জানি না। এই আইনটা বলবৎ করতে কত সংখ্যক প্রবেশন অফিসার থাকতে হবে, সে বিষয়টিরও এখনও সুরাহা হয়নি। চাইলেই যে এখন প্রবেশন অফিসার নিয়োগ করা যাবে, তাও নয়। আবার কিশোর অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে জেলেও পাঠানো যাবে না। তাদের পাঠাতে হবে সংশোধনাগারে। সংশোধনাগারও অপ্রতুল।
এর ফলে অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে দাবি করেন বেনজীর।
শেষ পর্যন্ত বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর উপর ছেড়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যদিও আমরা আন্তর্জাতিক একটা আইনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, সেই জায়গাটিতে আমাদের করণীয় কী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেটা চিন্তা করবেন। সেই জায়গা থেকে দেখার বিষয় রয়েছে বলে আমি মনে করি।’ সূত্র: বিডিনিউজ
Discussion about this post