চট্টগ্রাম, ২০ আগস্ট, ২০২৩:
ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন অপটোমেট্রি (বি.অপটম) কোর্সে ১৪ তম ব্যাচের নবীন বরণ ২০ আগস্ট, রোববার চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ইমরান সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (চমেবি)’র অধীনে চক্ষু হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অব কমিউনিটি অফথালমোলোজি (আইসিও)’র উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠান শিক্ষার্থী মঈন উদ্দিন খানের কোরআন তেলাওয়াত ও শিক্ষার্থী সনি দাশের শ্রীমদ্ভগবদ গীতা পাঠের মাধ্যমে সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকের সমন্বয় থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ, শিক্ষকের আন্তরিকতা ও অভিভাবকের তদারকিতে একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষাজীবনের আলো জ্বালাতে পারে।
সারাদেশে চক্ষু সোবার পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্যে দক্ষ অপটোমেট্রিস্ট ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন বলেন, বিশ্বে অপটোমেট্রি বহুল প্রচলিত নাম হলেও আমাদের দেশে এটি একেবারে নতুন। একজন চিকিৎসকের সাথে চারজন অপটোমেট্রিস্ট থাকার কথা থাকলেও দেশে তার সংখ্যা একেবারে সীমিত। তাই বছরে ৫০০ অপটোমেট্রিস্ট তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, মনোযোগ, মেধা-শ্রম থাকলে সব কিছুতে সফলতা অর্জন করা সম্ভব। মাত্র ৩৬শ’ টাকা মূলধন নিয়ে হাসপাতালটির পথচলা শুরু হয়। আর এখন প্রতিনিয়ত সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শত শত চক্ষু রোগীর পদচারণায় এই হাসপাতাল মুখরিত উঠে। হাসপাতালটি আরো উন্নত প্রযুক্তি এবং এর কার্যক্রম আরো প্রসার করা হচ্ছে। মানসম্পন্ন চক্ষু সেবা প্রদান চক্ষু চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ উন্নয়ন ও একটি উৎকৃষ্ট চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে পরিণত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অন্যতম লক্ষ্য। আমরা নগর জীবনের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসাসেবা ছড়িয়ে দিতে উপজেলাগুলোতে ভিশন সেন্টার করে জটিল ও কঠিন রোগীকে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সেবা দেয়া হচ্ছে।
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, পড়ালেখায় মনোযোগী হয়ে নিজেকে সুশিক্ষিত ও দক্ষ অপটোমেট্রিস্ট হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাহলে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। তিনি নবাগত শিক্ষার্থীদের পেশাগত উৎকর্ষতা অর্জনের জন্য বিভিন্ন দিক নির্দেশনাও দেন তিনি। এ সময় মানব সেবা করতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গকারী চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের ডা. ইমরানকে স্মরণ করেন।
আইসিও’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. রাজিব হোসেন, বি.এস.সি ইন অপটোমেট্টি’র কোর্স কডিনেটর জুয়েল দাশ গুপ্ত, অভিভাবক ছাবের আহাম্মদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে তথ্য উপস্থাপন করেন মোশারাফাতুল জান্নাত আঁখী। সমাপনী বক্তব্য রাখেন একাডেমিক কোডিনেটর ও আইসিও’র অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ওসমানী। উপস্থিত ছিলেন-অধ্যাপক ডা. জেসমিন আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক ডা. শায়লা বেগম, প্রভাষক রেহনুমা তারান্নুম, শেখ তামিমা হাসান, ডা. আবু বক্কর সিদ্দিকী, অপটোমেট্রি ইনস্ট্রাকটর জান্নাতুন নূর লিজা, শ্রী প্রনয় রায়, হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা শহীদ ফারুকী, আইসি’র ঊর্ধ্বতন হিসাব কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। আইসিও’র গবেষণা কর্মকর্তা তানজিলা মোহনার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন অপটোমেট্রি কোর্সের ২০২১-২০২২ নবীন ৩৫ শিক্ষার্থীকে বরণের পাশাপাশি ১ম, ২য় ও ৩য় বর্ষের ২০২১ জানুয়ারির চূড়ান্ত পরীক্ষায় মেধার স্বাক্ষর রাখা ১০ জন শিক্ষার্থীকে নগদ টাকা বৃত্তি ও শিক্ষা সনদ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন স্যারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই হাসপাতালে অনেক আগ থেকে অপটোমেট্রি গ্রেজুয়েশন কোর্স চালু হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম বলেন, এদেশে যে পরিমাণ চক্ষু চিকিৎসক রয়েছে সেই তুলনায় অপটোমেট্রিস্ট নেই বললেই চলে। তিনি এখান থেকে উন্নত শিক্ষার মাধ্যমে অপটোমেট্রিস্টরা যাতে সারাদেশে এমনকি বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আইসিও’র অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ওসমানী বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে চক্ষু চিকিৎসা সেবায় অপটোমেট্রিস্টদের ভূমিকা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের প্রচেষ্টায় এখানে অপটোমেট্রি গ্র্যাজুয়েশন কোর্স শুরু হয়েছে। একমাত্র এই চক্ষু হাসপাতালে দেশের প্রথম কোর্সটি চালুর পর থেকে ক্রমান্বয়ে এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি
Discussion about this post