চট্টগ্রাম, ২৭ আগস্ট, ২০২৩:
আবার ডুবে গেছে চট্টগ্রাম নগরের নি¤œ এলাকা। আর এই জলাজট ঠেলে সকালে ছুটতে হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের। আজ থেকে চট্টগ্রামে শুরু এইচএসসি পরীক্ষা।
চট্টগ্রামে গতরাত থেকে লাগাতর বর্ষণ শুরু হয়। এতে নগরের নি¤œ এলাকার বিভিন্ন জায়গায় পানি উঠেছে। গতকাল শনিবার বিকাল থেকে শুরু হয় ঝিরঝিরে বৃষ্টি। ক্রমশ বাড়তে থাকে বৃষ্টির মাত্রা। রাত ১২ টার পর থেকে শুরু হয় লাগাতর বর্ষণ। এতে পানিতে তলিয়ে যায় নগরের নি¤œ এলাকা। যে কারণে আজ ২৭ আগস্ট সকালে কর্মস্থলে যেতে ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় নি¤œ এলাকায় বসবাসকারী বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে। একইসাথে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির মুখে পড়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে। এমনকি দিনের ১১ টা বেজে গেলেও অনেক নি¤œ এলাকা তখনও পানিতে নিমজ্জিত ছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের, চট্টগ্রাম পতেঙ্গার দায়িত্বরত কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম পিসিএলকে জানান, ২৬ আগস্ট দুপুর ১২ টা থেকে আজ ২৭ আগস্ট দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ১১৮. ১ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামে। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর বিকাল থেকে বৃষ্টিপাত কমে আসার বার্তা দিয়েছে।
তবে সারারাতের বৃষ্টিতে নগরীর বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, শুলকবহর, মোহাম্মদপুর, কাপাসগোলা, চকবাজার, বাকলিয়ার বিভিন্ন এলাকা,হালিশহর, আগ্রাবাদ সিডিএ ও শান্তিবাগ আবাসিক এলাকা, ছোটপোল ফিরিঙ্গিবাজারের একাংশ, কাতালগঞ্জ, কেবি আমান আলী রোড, চান্দগাঁওয়ের শমসের পাড়া, ফরিদার পাড়া, পাঠাইন্যাগোদা, মুন্সীপুকুর পাড়, তিন পুলের মাথা, রিয়াজউদ্দিন বাজার, মুরাদপুরের বিভিন্ন এলাকার সড়ক ও অলিগলি পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
এছাড়া নি¤œ এলাকায় বসবাসকারীদের ঘরে পানি উঠে। এতে বসবাসকারীদের ব্যাপক দুর্ভোগে পড়ে। নি¤œ এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সেখানকার দোকানপাট খুলতে পারেনি সকালে ব্যবসায়িরা। আবার যেসব দোকানে পানি ঢুকেছে সেসব দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যবসায়ীরা অবর্ণনীয় কষ্টের মুখে পড়ে।
রায়হান নামে বাদুরতলার এক মুদি দোকানদার বলেন, জলাবদ্ধতায় দোকানও ডুবেছে আমার। বাসা ডুবেছে। কোথাও যাবার জায়গা নেই। তার পানি নামার জন্য অপেক্ষা করছি।
জহির নামে এক বেসকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জানান, বাদুর তলার মাজার গেট এলাকা অল্প বৃষ্টিতে পানি জমে ডুবে যায়। পানি নামতেও অনেক দেরি হয়। দীর্ঘদিন নালা নর্দমা পরিষ্কার করে না সিটি কর্পোরেশন।
জলাবদ্ধতার ব্যাপারে নগরের লোকজন জানান, শুধু ভোগান্তিই নয়, কোমর ও বুক অবধি পানিতে তলিয়ে যাবার আশঙ্কায় ভুগছে মানুষ। গত কয়েক বছরে প্রায় ৫ জন মানুষ তলিয়ে গেছে নগরের নালা নর্দমার পানির ¯্রােতে। এই পাঁচ জনের মধ্যে ৪ জনের লাশ পাওয়া গেলেও একজনের লাশের দেখা মেলিনি আজও।
নগরের চকবাজার এলাকার এক বেসরকারি কর্মচারি আমির হোসেন বলেন, সকালে চকবাজার জুড়ে জলাবদ্ধতা হওয়ায় অফিসে যেতে অনেক দেরি হয়েছে। কোনো রকমে ঘর থেকে বের হলেও গাড়ি পাচ্ছিলাম না। সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে অনেক টাকা খরচ করে অফিসে যেতে হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের নি¤œ এলাকা বৃষ্টিতে ডুবলে শুধু যাতায়াতে দুর্ভোগ বা কর্মহীন পড়ার ঘটনা তো ঘটেই সেই সাথে পানিতে ডুবে কিংবা জল¯্রােতে ভেসে প্রাণহানি হবার আশঙ্কাও দেখা দেয়।
নগরের এক গৃহিণী অন্তরা বড়–য়া বলেন, আমার মেয়ে অফিসে যাচ্ছে কোমর সমান পানি ভেঙ্গে। পানি ভেঙ্গে যাওয়াটা বড় কথা নয়, সেখানে পথে বিদ্যুতের অনেক খাম্বা বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে। সেটা যেমন বিপদ. তেমনি নালা নর্দমার পানির ¯্রােতে ভেসে যাবার টেনশন কাজ করে সারাক্ষণ। এর আগে অনেকেই তো ¯্রােতে ভেসে মারা যাবার খবর পেয়েছি।