চট্টগ্রাম, ৯ অক্টোবর, ২০২১:
আগামী কাল, ১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। ‘অসম বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য’এপ্রতিপাদ্যের আলোকে এ বছর দিবসটি পালিত হবে। দিবসটি পালনের জন্য সারাদেশে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংগঠন নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এদিকে মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বানী দিয়েছেন। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস প্রচারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বানীতে বলেছেন, করোনা মহামারির এই বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার পরিধি আরও বিস্তৃত করতে হবে।‘বর্তমানে করোনা মহামারির এই বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে জনসাধারণের মানসিক স্বাস্থ্য মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তি ছাড়াও পরিবারের সদস্য, সামাজের নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের মানসিক স্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন। এই পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার পরিধি আরও বিস্তৃত করতে হবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘অসম বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য’ সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব সভ্যতা বিকশিত হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তর বৈষম্য ও নানাবিধ অসমতা রয়ে গেছে দেশে দেশে। এ অসমতা অর্থনৈতিক, সামাজিক এমনকি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও। স্বাস্থ্যের দিকে যদি তাকাই তাহলে মানসিক স্বাস্থ্য আরো বেশি উপেক্ষিত। অথচ সুখী, সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন মানবিক বিশ্ব গঠনে শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার মানসিক স্বাস্থ্যের এই প্রয়োজনীয়তা যথাযথভাবে অনুধাবন করে। এজন্য আমাদের সরকার ২০০১ সালে ঢাকার শেরে বাংলা নগরে প্রতিষ্ঠা করে ‘জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট’। সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য বাস্তবায়নে এটি একটি মাইলফলক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে- এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, ইনশাআল্লাহ।
এদিকে বাসস জানিয়েছে-বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে আগামী ১০, ২৯ ও ৩০ অক্টোবর এবং ৫ নভেম্বর চার দিনের বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আগামীকাল রোববার বেলা ১১টায় এ বিষয়ে একটি ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হবে। এ বছরের দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ‘অসম বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ, বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি এবং ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে এ দিবসটি পালন করা হবে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির সভাপতি ড. মুহাম্মাদ মাহমুদুর রহমান।
এ ছাড়া এদিন রাত ৮ টা এবং রাত সাড়ে ৯ টায় মানসিক স্বাস্থ্য ও এবারের প্রতিপাদ্যের উপর দুটি ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ২৯ ও ৩০ অক্টোবর এবং ৫ নভেম্বর মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অনলাইন জুমে অনুষ্ঠিত হবে গুরুত্বপূর্ণ ও যুগোপযোগী আরো ১১টি কর্মশালা। কর্মশালা সমূহের মধ্যে রয়েছে:
১. আপনি কি নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট? আমাকে নিয়ে আমি যেভাবে ভালো থাকতে পারি
২. মনোজগতের পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে কি জীবনের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব?
৩. আমাদের জীবনের গল্প আমরাই সাজাই: আত্মহত্যা প্রতিরোধ করি
৪. Neuropsychological Consequences of Stroke.
৫. জীবনকে ভালোবাসুন- মানসিকভাবে সুখী ও অর্থপূর্ণ জীবন গড়ুন
৬. দুই প্রজন্মের সেতুবন্ধনঃ দূরত্ব নয় বন্ধুত্ব ৭. করোনাকালে সন্তান প্রতিপালনে আপনি কী করবেন?: কিছু অহিংস কৌশল জানুন
৮. করোনায় মানসিক সুস্বাস্থ্য: কী করতে পারি আমরা?
৯. নারী ও পুরুষের মনো: যৌন সমস্যা: মনোবৈজ্ঞানিক সমাধান ও করণীয়
১০. Borderline Personality Disorder: Myths and Reality
১১. রোমান্টিক সম্পর্কের উন্নয়ন: আপনার করণীয় কি?
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস হল পৃথিবীর সকলের মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা, সচেতনতার দিন। এটি ১৯৯২ সালে প্রথমবার পালন করা হয়েছিল।কিছু দেশে একে মানসিক রোগ সচেতনতা সপ্তাহের অংশ হিসাবে পালন করা হয় ।
Discussion about this post