চট্টগ্রাম, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪:
শীতের ভরা মৌসুমে সবজির দাম কম থাকার কথা থাকলেও তবে এবারের চিত্র ভিন্ন আকার ধারণ করেছে। ফটিকছড়ি উপজেলার বাজারগুলোতে প্রতিটি সবজির দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। দামবৃদ্ধির কারণে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নি¤œ ও মধ্যম আয়ের মানুষের। মূল্যবৃদ্ধির পর আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য রাখতে তাদের এখন পরিমাণে কম কিনতে হচ্ছে। উপজেলার হালদার নদী ও ধুরুং খালসহ একাধিক খালের চরে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। তারপরও স্থানীয় বাজারগুলোতে সবজির দাম না কমায় সাধারণ ক্রেতাগণ হতাশা প্রকাশ করেছেন।
নাজিরহাট বাজারে ক্রয় করতে আসা ক্রেতা বোরহান আহমেদ ও সিরাজদৌল্লা চৌধুরী দুলাল বলেন, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে সবজিসহ সকল পণ্যের দাম বেড়েছে । যখন প্রশাসন বাজার মনিটরিং করে তখন দাম কমে যায় বলে তারা জানান।
বৃদ্ধ ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, গত বছর এই সময়ে ১০০ টাকায় পাঁচ কেজি আলু, ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ ও ১৫০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি কিনেছিলাম। কিন্তু এই বছর সবজির দাম দ্বিগুণ বেড়েছে।
দামের কথা স্বীকার করে নাজিরহাট কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ি মো. মোস্তফা, আবু সওদাগর বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার সবজির দাম দুই থেকে তিনগুণ বেশি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাঠপর্যায়ের এক কৃষি কর্মকর্তা বলেন, উৎপাদন ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। শ্রম ব্যয় এবং সার ও বীজসহ কৃষি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচের ওপরও প্রভাব পড়েছে।
গতকাল উত্তর চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী নাজিরহাট বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও বিক্রি হচ্ছে উচ্চ দামে। সেই সঙ্গে পেঁয়াজ, আলু, কাঁচামরিচ, আদা, রসুনের চড়া দাম মূল্যবৃদ্ধি সূচকে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বাজারে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০-৭৯টাকা দরে। আলু ৫৫-৬০টাকা কেজিতে। শিম ৭০ টাকা, শিমের বিচি কেজিতে ২০০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০-৬০টা পিচ, মুখিকচু ৬০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি বেগুন ৬০ -৭০ টাকা , মটরশুঁটি ৬০-১০০ টাকা, টমেটো ৫০-৭০ টাকা, করলা ৮০-১২০ টাকা, পেঁয়াজ (দেশি) ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নাজিরহাট পৌরসভার মেয়র লায়ন একে জাহেদ চৌধুরী বলেন, পৌর এলাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণে কয়েকদফা সরেজমিনে পরিদর্শন করে ব্যবাসায়িদের সর্তক করেছি। বিগত সময়ে প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে একাধিক ব্যবসায়িকে জরিমানাও করেছে। তারপর এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়িরা পণ্যের দাম বেশি নিচ্ছে। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছেন । সম্প্রতি একাধিক বাজারে অভিযান চালানো হয়েছে । চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান উপজেলা সহকারী (ভূমি), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট এটি এম কামরুল ইসলাম।
Discussion about this post