চট্টগ্রাম,২২ এপ্রিল, ২০২৪:
চট্টগ্রামে ১৪ উপজেলায় উপজেলা পরিষদের নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের কোনো কোনো উপজেলায় আওয়ামী লীগের মধ্যে গৃহবিবাদ নতুনভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এই হিসাবের মধ্যে আছে এবারের আনোয়ারা উপজেলা নির্বাচন। সেখানে উপজেলা নির্বাচনের আগে থেকেই সাপে-নেউলে পরিস্থিতি ছিল সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী বেগম ওয়াশিকা আয়শা খানের মধ্যে।
আনোয়ারা উপজেলায় তৃতীয় ধাপে ১৮ মে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে চট্টগ্রামের চার উপজেলার মধ্যে রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ইতিমধ্যে একক প্রার্থীই পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না থাকায় দলের সকলের জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত। তবে সম্প্রতি মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব খাটানোর অভিযোগে মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়- পরিজনদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করতে আওয়ামী লীগ নির্দেশনা দিয়েছে।
তবে আনোয়ারায় দলীয় মন্ত্রী- এমপিদের আত্মীয়-স্বজন বা ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী ভাইবোন না হলেও সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও ওয়াশিকা আয়েশা খান সমর্থিত আলাদা আলাদা প্রার্থীই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। এরমধ্যে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ সমর্থিত হিসাবে একই পদে লড়াই করবেন।
অন্যদিকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াশিকা আয়শা খান সমর্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হকের নাম শোনা যাচ্ছে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী হিসাবে।
সাইফুজ্জামান ও ওয়াশিকার পক্ষ নিয়ে সম্ভাব্য দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াইয়ে এবার আনোয়ারা উপজেলা নির্বাচন উত্তপ্ত থাকবে।
বিশেষ করে গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বেগম ওয়াশিকা আয়শা খানকে অর্থ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে সাইফুজ্জামান চৌধুরী প্রতিপক্ষ হিসাবে ওয়াশিকাকে পেয়ে যান। যিনি একাদশ সংসদে মন্ত্রী পরিষদে ভূমিমন্ত্রী ছিলেন, দ্বাদশ সংসদে এসে মন্ত্রীর দায়িত্ব বঞ্চিত হন।
এরপর থেকে আনোয়ারা উপজেলার এই দুই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বির মধ্যে প্রবল লড়াই শুরু হয়। আনোয়ারা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী আনোয়ার গত ২৯ মার্চ আনোয়ারা উপজেলা মিলনায়তনে এক সভায় প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান ও তার অনুসারীদের উদ্দেশ্য বলেছেন, আনোয়ারায় কেউ সভা করলে এক সপ্তাহ আগে অনুমতি নিতে হবে। তিনি এও বলেন,এটা আমার নির্বাচনী এলাকা এবং আমি এই আসনের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। এখানে কোনো দ্বৈত শাসন থাকবে না।
আনোয়ারার রাজনীতিবিদরা বলছেন, আগামী আনোয়ারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পর্যন্ত এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরো প্রবল রূপ ধারণ করবে। বিশেষ করে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মন্ত্রী পদ না পাওয়ায় তিনি এখন অনেকটা আক্রমণাত্মক মেজাজে আছেন।
যা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দুই পক্ষের কথার লড়াইয়ে প্রবল রূপ লাভ করে।
তবে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিএম এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার নাসির উদ্দিন মাহমুদ, আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী শীগের সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরীর নামও সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় শোনা যাচ্ছে।
তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২রা মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ই মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ই মে। আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ই মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ই মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ই মে এবং ভোট ২৯শে মে। এই ধাপে ৪৭ জেলার ১১২ উপজেলায় ভোট হবে।
Discussion about this post