চট্টগ্রাম, ২৬ মার্চ ২০২৫:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ৯ বছর বয়সী হেফজখানায় পড়ুয়া এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মো. আফনান (১৯) নামে এক মাদ্রাসার শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় জনতা।
মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ রাতে উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদের পাড়া ধর্মপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসা হোস্টেলের শয়ন কক্ষ থেকে শিক্ষককে আটকের পর গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়।
শিক্ষক আফনান উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর ছদাহা মিয়াজী পাড়ার মো. ইদ্রিসের ছেলে এবং ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক। দুই বছর ধরে ওই শিক্ষক এ মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে আসছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার গভীর রাত সোয়া দুইটার দিকে বলাৎকারের শিকার ছাত্রের বাবা বাদি হয়ে ওই শিক্ষককে একমাত্র আসামি করে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বলাৎকারের শিকার শিশুটি উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদের পাড়ার ধর্মপুর হাফেজিয়া হেফজখানা ও এতিমখানার হেফজ বিভাগে অধ্যয়নরত ছিল। গত সোমবার, ২৪ মার্চ গভীর রাতে নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে শিশুটিকে জোরপূর্বক বলাৎকার করে শিক্ষক আফনান। পরদিন মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে শিশুটি বাড়িতে এসে তার মা-বাবকে বিষয়টি খুলে বলে। এর প্রেক্ষিতে শিশুটির মা-বাবা মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ঘটনাটি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিকে অবগত করেন। এরপর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিক্ষককে আটক করেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে গণধোলাই দেন। পরে ওসির নেতৃত্বে সাতকানিয়া থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
ছাত্রটির বাবা বলেন, এ ঘটনার আগে ওই শিক্ষক আমার ছেলেকে একাধিকবার বলাৎকার করলেও ছেলের ভবিষ্যৎ ও লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি এতদিন গোপন করেছিলাম। পরে দেখি বিষয়টি অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে । তাই বিবেকের তাড়নায় বিষয়টি আমি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিকে অবগত করার পর ওই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্থানীয় লোকজনকে সাথে নিয়ে মাদ্রাসায় যায়। ওই শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ সময় লোকজন শিক্ষককে মারধর করে পুলিশকে দিয়ে দেয়। এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি ।
সাতকানিয়া থানার ওসি মো.জাহেদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে রাতেই জনরোষ থেকে আটক করে ওই শিক্ষককে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ওই শিক্ষক ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রের বাবা বাদি হয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই শিক্ষককে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আজ বুধবার সকালে আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
ছবি: অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক
Discussion about this post