চট্টগ্রাম,২৩ এপ্রিল, ২০২৫:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ১৪ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে নিজের অমতে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বাদি হয়ে তার মা, সৎ বাবা ও বিয়েতে সহযোগিতার অভিযোগে প্রতিবেশী আরও ৩ জনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন-মা মিনু আক্তার, সৎ বাবা নুরুল ইসলাম, প্রতিবেশী মৃত ফকির মোহাম্মদের ছেলে আব্দুর রশিদ, তার (আবদুর রশিদ) স্ত্রী হালিমা বেগম ও ছেলে মোহাম্মদ রাকিব। অভিযুক্তরা উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মাহালিয়া গ্রামের চিতামুড়া এলাকার বাসিন্দা। উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মহালিয়া গ্রামের চিতামুড়া এলাকার মৃত আবু নৈয়মের মেয়ে ও একই ইউনিয়নের বাজালিয়া হেদায়েতুল ইসলাম ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী বাল্য বিবাহের শিকার মোছাম্মৎ জান্নাতুল নাঈমা(১৪) জানায়, তার সাথে ৫ লাখ টাকার দেনমোহরে একই এলাকার জাবেদ নামে এক যুবকের সাথে বিয়ের আয়োজন করেন তার মা মিনু আক্তার ও সৎ বাবা নুরুল ইসলাম।
নাঈমা বলেন, আমার বয়স এখনও ১৪ বছর। আমার ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা শেষ করে সংসারের হাল ধরব। কিন্তু আমার মা ও সৎ বাবা মিলে আমাকে মারধর করে জোরপূর্বক বিবাহ রেজিস্ট্রিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। একাধিক বার পালিয়ে থেকেও আমার মা ও সৎ বাবা আমাকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর জন্য চেষ্টা করে। তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছি।
জানা গেছে, নাঈমার মতের বিরুদ্ধে গোপনে কাজীর মাধ্যমে বিয়ে রেজিস্ট্রি হবার পর দুই মাস নাঈমা তার বাপের বাড়িতে থাকার শর্তে নিকা সম্পন্ন করে।
শর্ত অনুযায়ী ওই ছাত্রী নিজ বাড়িতে অবস্থানকালিন সে বাড়ি থেকে পালিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেন। বিষয়টি জানার পর
তার মা ও সৎ বাবা নাঈমাকে নিকটাত্মীয়ের বাসা থেকে জোরপূর্বক বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর মারধর করে জোরপূর্বক শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর চেষ্টা করলে নাঈমা খালু জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে ঠিকানা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম নগরীর মনোয়ারা বেগম নামে আরেক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেন।
এ ঘটনার পর নাঈমার মা বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর নাঈমা থানায় গিয়ে পাল্টা তার মা ও সৎ বাবার বিরুদ্ধে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
এরপর স্থানীয়দের সাথে বৈঠকের মাধ্যমে সাতকানিয়া থানার উপ পরিদর্শক খাইরুল হাসান সহ অন্যরা অপ্রাপ্ত বয়সি মেয়ে হিসাবে নাঈমার বিবাহের সম্পর্কটি ছিন্ন করে। নাঈমা এখন তার দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় বাড়িতে অবস্থান করছেন।
Discussion about this post