চট্টগ্রাম, ২৯ জুন, ২০২৫:
চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ এবং সর্ববৃহৎ টার্মিনাল নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল (এনসিটি)। এটি পরিচালনার দায়িত্ব বহুল আলোচিত সাইফ পাওয়ার টেক থেকে নিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হলেও শেষ পর্যন্ত এনসিটি পরিচালনা কীভাবে হবে তা এখনো চূড়ান্ত নয়।
নাকি সাইফ পাওয়ার টেককে পুনরায় এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সে কথাও আসছে।
কারণ আজ শনিবার সকালে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল(অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংয়ে তেমনই আভাস দিয়েছেন।
সাংবাদিকরা এনসিটি নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে চাইলে নৌপরিবহন ও শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এনসিটি নিয়ে ফিউচার প্ল্যান হচ্ছে আমরা কারো বিরুদ্ধে না। এতদিন যারা চালিয়েছেন তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আছে। আমরা আশা করি একটা কোঅপারেশন যাতে হয়। এ বিষয়টা নিয়ে অনেক রকম মিস কনসেপশন আছে। এক ধরনের দিয়ে দিলরে নিয়ে গেল রে। পঁচাশি নব্বই একশটা পোর্ট বিভিন্ন অপারেটর চালাচ্ছে। সেদেশ কী নিয়ে গেছে। এটা যারা বলেন তারা হয়ত বোঝেন না। অথবা তাদের অন্য কোনো বিষয় থাকতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের পোর্ট যাতে আরো স্মার্ট হয়। এবং আন্তর্জাতিকভাবে পোর্টটা যাতে কানেকটেট হয়। সেগুলো না দেখে- নিয়ে গেল। এই হল। এখানে তো কোন বাইরের লোক আসবে না।
তিনি বলেন, যারা লোকবল এখানে কাজ করেছে তারা এখনো কাজ করবে ইনশাল্লাহ। আগামীতেও কাজ করবে।
তিনি সরাসরি সাইফ পাওয়ারটেকের কথা না বললেও শ্রম মন্ত্রণালয় তার অধীনে সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আমি শুধু শিপিং মিনিস্ট্রি দেখছি না। আমি শ্রম মন্ত্রণালয়ও দেখি। শ্রমিকরা আমার কনসার্নড। তাদের একজনের ক্ষতি হওয়া মানে আই এম কনসার্নড।
অর্থাৎ সাইফপাওয়ারটেক না থাকলেও তাদের শ্রমিকরা কাজ করবে সেই ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন তিনি।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টার কথার আকার ইঙ্গিতে সেই সম্ভাবনা থাকছে- নাকি তাদের শ্রমিকরা এনসিটি অপারেশনের কাজে।
বেসরকারি অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেকের সাথে চুক্তির মেয়াদ আগামী ৬ জুলাই শেষ হচ্ছে। ৭ জুলাই থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেরাই এই টার্মিনালের অপারেট করবে আগে শুনা গেছে।
নৌবাহিনীর সহায়তায় এনসিটি পরিচালনার করা হবে- এমন কথাও কারো কারো মুখ থেকে শুনা যাচ্ছে।
তবে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেছেন, সঠিক খবর পেতে হলে আরো দু’এক দিন অপেক্ষা করতে হবে।
২৮ জুন সকালে তিনি চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন শেষে বন্দর কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন।
বৈঠক থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের প্রথমে তিনি চট্টগ্রামে কটন কটন বায়ার হাউজ হবে বলে জানান।
এরপর কাস্টমসের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে টার্মিনাল জটের ব্যাপারে তিনি বলেন,এখন পর্যন্ত পোর্টের উপর চাপ পড়েনি। যেগুলো ক্লিয়ার হয়ে যাচ্ছে সেগুলো এখন লোড হচ্ছে। আনলোড যেগুলো হচ্ছে সেগুলোর জন্য জায়গা আছে। তাদের কর্মবিরতি কন্টিনিউ করলে অবশ্যই, বাংলাদেশ পোর্টের যদি অসুবিধা হয় বিশেষ করে চট্টগ্রাম পোর্ট, চট্টগ্রাম পোর্টের অসুবিধা হওয়া মানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগা। আশা করি কাস্টমসের যারা কর্তাব্যক্তিরা আছেন তারা এবং অর্থ উপদেষ্টা উনারা দেখছেন বিষয়টা। কিন্তু শুধু চট্টগ্রাম পোর্ট নয়, অল পোর্ট- ল্যান্ড পোর্ট, আমি তো বেশি সাফারার। ল্যান্ড পোর্ট এয়ার পোর্ট সব জায়গায় অসুবিধা হচ্ছে।
এছাড়া নৌ পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন,আমরা চিন্তা করতেছি ক্রেইনগুলো রিপ্লেস হবে ডাবল কন্টেইনার ক্যারি করার জন্য নতুন ক্রেইন আনা যায়।
তিনি মাতারবাড়ী ডিপ সি পোর্টের জন্য আলাদা অথরিটি হচ্ছে জানিয়ে বলেন, একইভাবে চিন্তাভাবনা হচ্ছে মাতারবাড়ী পোর্টের জন্য আলাদা একটা অথরিটি তৈরি করার। সেপারেট অথরিটি, মাতারবাড়ী ডিপ সি পোর্ট অথরিটি। এটা কাজ চলছে।