চট্টগ্রাম, ২ জুলাই, ২০২৫:
সাতকানিয়ায় মাদক কারবারিদের হামলায় মাদ্রাসার ৪ ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছেন।আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- কালিয়াইশ ইউনিয়নের রসুলাবাদ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো.সাকিব (২২), একই মাদ্রাসার এবারের আলিম পরীক্ষার্থী রাকিব আহমেদ জিহাদী (২০), আলিম প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান (১৮) ও একই উপজেলার কেরানিহাট জামে উল উলুম ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী শামসুর রহমান (২০)।
তাদের মধ্যে আহত ইসলামী ছাত্রশিবির কালিয়াইশ ইউনিয়ন শাখার সাবেক সেক্রেটারি রাকিব আহমেদ জিহাদী বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে মহাসড়কের সাথে লাগোয়া উত্তর সাতকানিয়া জাফর আহমদ চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের সামনে টার্ফ থেকে ফুটবল খেলে আমরা ৫ জন মৌলভীর দোকানের দিকে যাচ্ছিলাম। টার্ফ থেকে ২০০ গজ উত্তরে গেলে দেখি কয়েকজন ব্যক্তি অন্ধকারে বসে আছে। কাছে গিয়ে দেখি স্থানীয় যুবলীগ নেতা মিনার চৌধুরীসহ ৩ ব্যক্তি মাদক বিক্রি ও সেবনে লিপ্ত। আবার অনেকেই মোটর সাইকেল ও গাড়িতে করে এসে মাদক ক্রয় করে চলে যাচ্ছে। মিনার ছাড়া অন্যরা আমাদের অপরিচিত। তখন আমরা সমস্বরে কেন এসব হচ্ছে জিজ্ঞাসা করতেই তারা আমাদের মা-বাবা ধরে গালিগালাজ শুরু করে। পরে মিনার মোবাইল করলে আরও দুই জন মাদক ব্যবসায়ী লোহার পাইপ ও ছুরি নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা করলে লোহার পাইপের আঘাতে সাকিব গুরুতর আহত এবং আমরাও মারধরের শিকার হই।
গুরুতর আহত সাকিব বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনায় বুধবার (২জুলাই) সকালে থানায় মামলা হয়েছে।
রাকিব আহমেদ জিহাদী বলেন, আহতরা কালিয়াইশ ইউনিয়ন ছাত্র শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্বশীল।
এ ব্যাপারে কালিয়াইশ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির আবুল বশর ছিদ্দিকী বলেন, ওসি যদি নমনীয় না হয়ে আগেই মাদক কারবারি ও ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত তাহলে এরকম ঘটনা ঘটত না। কালিয়াইশ ইউনিয়নে মাদক বন্ধ করতে মাদকের গড ফাদার ও মাদক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে থানার ওসি সাহেবকে অনেকবার বলেও কোন কাজ হয়নি। স্কুল, রেল লাইন ও মাস্টারহাটসহ এ ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে প্রকাশ্যে মাদক ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এ ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে ছাত্রীরা ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে। অথচ পুলিশ একজন অপরাধীকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
জামায়াত নেতার এ অভিযোগে সাতকানিয়া থানার ওসি মো.জাহেদুল ইসলাম বলেন, মাদক ও ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে কালিয়াইশ ইউনিয়নে প্রতিদিন অভিযান চলমান রয়েছে।
মাদ্রাসা ছাত্রদের উপর হামলার ঘটনায় বুধবার সকালে সাকিবের বাবা আবুল হাশেম বাদি হয়ে মিনার, ইউছুফ ও গিয়াসকে এজাহারনামীয় ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানান ওসি। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মিনারের ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।