চট্টগ্রাম, ১১ ডিসেম্বর, ২০২২
স্বর্ণপদক জয়ী কম্বোডিয়ার সেই অসাধারণ ইঁদুরটি মারা গেছে। মাটির নিচ থেকে মাইন খুঁজে বের করা এই প্রশিক্ষিত ইঁদুর মাগাওয়া তার ৮ বছর জীবনের ৫ বছরের ক্যারিয়ারে কম্বোডিয়া থেকে ১০০ টির বেশি মাইন খুঁজে বের করেছে। মাগাওয়ার এই অসাধারণ কৃতিত্বে অসংখ্য মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছে। মাইন ছাড়া বিভিন্ন বিস্ফোরকের সন্ধান দিতে মাগাওয়া ছিল অনন্য। মাগাওয়াকে ছেড়ে দিলে সে ৪১ হাজার বর্গ মিটারের মধে্য মানে প্রায় ২০টি ফুটবল মাঠের সমান এলাকায় কোনো মাইন থাকলে তা সনাক্ত করতে পারত। এ কাজে সবচেয়ে কৃতিত্ব দেখানোর জন্য মাগাওয়াকে ২০২০ সালে পিডিএসএ স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। যা প্রাণীদের সাহসী কর্মকাণ্ডের জন্য দেয়া হয়। প্রাণীদের সাহসী কাজের জন্য পাওয়া এই পদককে বলা হয় জর্জ ক্রস পদক । মূলত মাগাওয়ার ঘ্রাণশক্তি এতটাই প্রখর ছিল যে ৭৭ বছরের মধ্যে মাগাওয়া ছাড়া অন্য কোনো হিরো র্যা টস এই স্বর্ণপদক জিততে পারেনি। মাগাওয়াকে ছেড়ে দিলে ২০ মিনিটের মধ্যে মাইন সনাক্ত করতে পারত। যা প্রযুক্তিগত উপায়ে ৩/৪ দিন লেগে যায়।
১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের মাগাওয়ার জন্ম তাঞ্জানিয়ায়। এটি ৭০ সেন্টিমিটার লম্বা ছিল। এগুলোকে ‘আফ্রিকান জায়ান্ট পাউচ র্যালট’ বলা হয়। মাইন শনাক্তের জন্য তাকে একবছর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাঞ্জানিয়ায় । তার প্রজাতির মধ্যে ইঁদুরটি তুলনামূলক স্বাস্থ্যবান ও নাদুসনুদুস ছিল। মাগাওয়া গত বছর জুনে কাজ থেকে অবসরে যায় ।
বেলজিয়ামের দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাপোপো’ মানুষের পুঁতে রাখা মাইন খুঁজে বের করতে ইঁদুরকে প্রশিক্ষণ দেয়। গত ৭৭ বছর ধরে তারা কাজটি করছে তারা। এসব ইঁদুরকে বলা হয় হিরো র্যা টস।
সবচেয়ে সফল হিরো র্যা টস মাগাওয়ার মৃত্যুতে অ্যাপোপো এক বিবৃতি বলেছে, ‘আমরা অ্যাপোপোর সবাই মাগাওয়াকে হারানোর বেদনা অনুভব করছি। সে যে অসাধারণ কাজ করছে তার জন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ।
বিবিসি জানায়, সপ্তাহান্তে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে মাগাওয়া। মৃত্যুর কিছুদিন আগে থেকে ম্যাগওয়া খাবার খাওয়া কমিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে খাবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। হঠাৎ নড়াচড়া বন্ধ করে দেয়, খেলাধুলা, দৌড়াদৌড়ি করতে পারত না। যদিও অবসরে যাওয়ার পর থেকে খেলাধুলা করে করে সময় পার করেছে মাগাওয়া।