চট্টগ্রাম, ৩০ এপ্রিল, ২০২২:
চলে গেলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত(৮৮)। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ শনিবার দুপুরে তার মরদেহ রাজধানীর শহীদ মিনারের সামনে নিয়ে গেলে সেখানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। রাজনীতিবাদ, সমাজকর্মী, আইনজীবী ও সাংস্কৃতিক কর্মিরা তার কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাকে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতি ম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানান।
সংসদে সব্বোর্চ বাংলাদেশ সরকারের বাজেট দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতা আবুল মাল আবদুল মুহিতকে আগামী কাল রবিবার সিলেট নগরের রায়নগর এলাকায় তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
শুধু অর্থমন্ত্রী নয় আবুল মাল আবদুল মুহিত বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী ছিলেন। তার ছাত্রজীবন ছিল অত্যন্ত গৌবোজ্জ্বল। তিনি ১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টানা দশ বছর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আবুল মাল আবদুল মুহিতকে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। অ্যাডভোকেট আবু আহমদ আবদুল হাফিজ সৈয়দ সাহার বানু চৌধুরীর ১৪ সন্তানের মধ্যে আবুল মাল আবদুল মুহিত ছিলেন তৃতীয়। তিনি সিলেট ১ আসন থেকে ২০০৮ সালে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পান। এরপর টানা দশ বছর তিনি অর্থমন্ত্রী ছিলেন।
ছাত্রজীবনে অত্যন্ত মেধাবী আবুল মাল আবদুল মুহিত সরকারের বিভিন্ন গুরুত্ব প্রতিষ্ঠানে ২৫ বছর চাকরি করে ১৯৮১ সালে স্বেচ্ছায় অবসওে যান। এরপর ১৯৮২-৮৩ সালে তখনকার এইচ এম এরশাদ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মুহিত ১৯৬৯ সালে ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে কূটনৈতিক দায়িত্ব পান। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ কওে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে জনমত সৃষ্টিতে সেখানকার সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে তৎপরতা শুরু করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের পরিকল্পনা সচিব হিসাবে চাকরি শুরু করেন।
সঙ্গীত পিপাসু মুহিতের রাজনীতির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও বিচরণ ছিল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে একটানা সাংস্কৃতিক কার্যক্রম উপভোগ করতেন তিনি। একজন লেখক হিসাবে তার গ্রন্থগুলোও তার উজ্জ্বল মেধার পরিচয় বহন করে। তার লেখা ইংরেজি ও বাংলায় প্রায় ৩০টি বেশি বই আছে।
Discussion about this post