চট্টগ্রাম, ২৩ আগস্ট, ২০২২:
চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে আলোচনা হলেও কেন এভাবে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা কিছু বলতে পারছেন না। তবে ডায়রিয়ার কারণ খুঁজতে কাজ করছেন তারা।
চিকিৎসকদের মতে, মূলত ডায়রিয়া পানির কারণেই এ সময়ে বেশি হয়। গরমে পানি কমে যাওয়ার ফলে রোগটার প্রকোপ বাড়ে।
এদিকে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম ওয়াসা সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। যদিও নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখার কারণে সরবরাহ লাইনে কোনো সমস্যা নেই এবং নিরাপদ পানি সরবরাহ করছে বলে দাবি ওয়াসার।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমাদের পানিতে কোনো সমস্যা নেই। আমরা আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগারে নিয়মিত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে পানি সরবরাহ করি। এরপরও গ্রাহকের পানির লাইনে বা রিজার্ভারে কোনো সমস্যা আছে কিনা সেটা দেখছি। ঢাকা থেকেও একটি টিম এসে পানির নমুনা পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে গেছে। আমরা যেসব এলাকা থেকে ডায়রিয়া রোগী বেশি আসছে সেখানে আমাদের পানি সরবরাহ করা হয় না। আমাদের সরবরাহ লাইনের এলাকা থেকেও কিছু রোগী যাচ্ছে। সেখানে জলাবদ্ধতাসহ অন্যান্য সমস্যা আছে। আমরা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করছি।
তবে নগরের বাইরে উপজেলায়ও ডায়রিয়া আক্রান্তের সঠিক কারণ খুঁজে বের করা যায়নি। এজন্য একটি টিমের কার্যক্রম চলছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, ডায়রিয়ার একটি ফর্ম হলো কলেরা, যার জীবাণু সাধারণত অপরিচ্ছন্ন খাবার বা দূষিত পানি থেকে আসে।
তথ্যমতে, চট্টগ্রাম জেলার ১৪ উপজেলায় গত দুই মাসে ৬ হাজার ৪৩ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ জন। অন্যদিকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ৯ দিনে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন গত ৩৮৩ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় নগওে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ জন। নগরের সকলে সীতাকু-ের ফৌজদার হাটের বিআইটিআইডিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, কলেরার জন্য দায়ী একটি বিশেষ ব্যাকটেরিয়া এবং এই ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনটাই কলেরা। কলেরার জীবাণুতে আক্রান্ত হলে শরীরে ডায়রিয়ার দেখা দেয় ও রোগী ক্রমাগত বমি করতে পারে।
চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় যারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের অনেকের নমুনা পরীক্ষা করে তাদের দেহে কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে। কিন্তু কেন এটি হচ্ছে, হঠাৎ করে এসব এলাকায় এতো বেশি আক্রান্ত হওয়ার কারণ কী, সে সম্পর্কে অনুসন্ধান এখনো শেষ হয়নি।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, নগরীতে একটি টিম দিয়ে ঠিক কি কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ, তা নিয়ে অনুসন্ধান চলছে। তেমনিভাবে উপজেলায়ও কার্যক্রম চলছে। তাদের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর ডায়রিয়ার আসল কারণ জানা যাবে। ছবি: অনলাইন থেকে সংগৃহীত
Discussion about this post