চট্টগ্রাম, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২:
শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাসের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম সহ সারা বাংলাদেশে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। গতবছর দুর্গাপূজায় কুমিল্লার নানুয়ারদিঘির পাড়ে মন্দিরে অষ্টমীর দিন কোরান শরীফ পাওয়ার সাজানো ঘটনায় নোয়াখালী, চাঁদপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতায় ১০ জন নিহত হয়েছিল। দেশের চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার, বাগের হাট, মৌলভীবাজার সহ বিভিন্ন দুর্গামন্দিরে অর্ধশতাধিক হামলার ঘটনা ঘটে। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জানিয়েছিল প্রায় ৭০টি পূজা ম-পে হামলা, প্রতিমা ভাঙ্গচুর, অগ্নিসংযোগ ও লাটপাট।
এসব ঘটনায় মামলা হয়েছিল তাও প্রায় অর্ধশতাধিক।
তবে ২০২২ সালে পূজায় হামলার আশঙ্কার মধ্যেও বেড়েছে পূজার সংখ্যা। গত বছর পূজার সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ১১৮টি। এ বছর ৩২ হাজার ১৬৮ টি শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এবারের দুর্গা পূজায় সরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি পূজা আয়োজকদেও শর্ত নিরাপত্তা জোরদারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েচে। এর মধ্যে প্রতিটি ম-পে সিসি ক্যামেরা লাগানো,
সার্বক্ষণিক আর্মব্যান্ড পরিহিত স্বেচ্ছাসেবক দল রাখা, গ্রামে আযোজকদেও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের প্রতিনিধিদেও নিয়ে কমিটি গঠন করা, বাদ্যপন্ত্রেও আওয়াজ সহনীয় পর্যায়ে রাখার শত দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে প্রশাসন প্রতি পূজাম-পে পুলিশ, র্যাবের অব্যাহত টহলের মধ্যে ২৪ ঘণ্টা দুজন আনসারের পালাক্রমে ডিউটি নির্ধারণ করা হয়েছে। এ হিসাবে প্রায় এক লাখ ৯২ হাজার আনসার দুর্গা পূজার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি সহ গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
পূজাম-প ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিতদেও সাথে পুলিশের কন্ট্রোলরুমের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হবে।
এদিকে চট্টগ্রামেও প্র্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে পূজা উদযাপন পরিষদেও বৈঠক হয়েছে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে ‘সাবর্বজনীন আইনশৃঙ্খলা কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও উপজেলা ও থানা পর্যায়ে সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশ হয়েছে। গঠিত হয়েছে সম্প্রীতির কমিটি, এসব সমাবেশে পূজায় যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি না হয় সেই বার্তা দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ কুমার ভট্টচার্য্য সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, মহানগরে এবার ২৮২টি পূজা হবে। তাদের সাথে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের পূজার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা তাদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। সুন্দরভাবে পূজা হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।
গতকাল ৩০ সেপ্টেম্বও বোধনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ছানিকতা শুরু হয়েছে। পূজা ও ধর্মীয় উৎসবের মধ্য দিয়ে ৫ অক্টোবর দেবি দুর্গাকে নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা। বাংলাদেশে দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৃথক বাণী দিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত