চট্টগ্রাম, ৯ েনভেম্বর, ২০২২:
কর্ণফুলি ড্রাইডক নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। একই সাথে আশেপাশের অন্যান্য সকল স্থাপনার নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে ৭ দিনের মধ্যে জাতয়ি নদী কমিশনের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নদী কমিশনের চেয়াম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী।
চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফুলী নদী সহ অন্য নদ-নদী খাল-বিল, জলাশয় ও জলাধারের দখল ও দূষণ সংক্রান্ত আলোচনা ও পর্যালোচনা সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন। ৯ অক্টোবর সকালে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এই সভা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী।
আনোয়ারার বদলাপুর মৌজায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে ও ব্যক্তি মালিকানায় কেনা ৩০ একর জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে কর্ণফুলী ড্রাইডক লিমিটেড।
গত মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর কর্ণফুলী নদী তীরবর্তি ড্রাইডক এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন নদী কমিশনের চেয়ারম্যান।
সভায় তিনি বলেন, কর্ণফুলি নদী চট্টগ্রামবাসীর জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি বাংলাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এটি দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন। এই নদীর প্রবাহ ও নাব্যতা ব্যাহত হলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নদীটির প্রশস্ততা কমে এসেছে। এমনকি জাহাজ চলাচলে বেগ পেতে হচ্ছে প্রশস্ততা হ্রাস পাওয়ার কারণে। দখলে প্রশস্ততা কমে আসছে। দখলে বহু বড় বড় প্রতিষ্ঠান জড়িত। আরো দখল করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, নদী জীবন্ত সত্তা। নদীর দূষণমুক্ত জলপ্রবাহ নিয়ে প্রবহমান থাকার অধিকার আছে। নদীর অধিকার মানে মানবাধিকার। যারা এর বিরুদ্ধে অপকর্ম করবে তাদের ছাড় দেওয়া হবেনা।
এজন্য পুরোদমে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে বলে সভায় জানানো হয়।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বদলপুরা এলাকাবাসী জানান, বদলপুরা গ্রামের মধ্য দিয়ে ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৩০০ ফুট প্রস্থের কর্ণফুলী নদী প্রবাহিত হতো এক সময়। এখন ভরাট হয়ে নদীর প্রস্থ ঠেকেছে ৫০ থেকে ৬০ফুটে। এতে নদীটি প্রায় মরে গেছে। এ ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে চরে সৃষ্টি হয়েছে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। ছৈলা, কেওড়া, বাইনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ জন্মেছে।
কর্ণফুলী ড্রাইডকের কর্মকর্তারা কর্ণফুলীর তীরে ড্রাইডক করার সরকারি অনুমতি নিলেও তা অস্বীকার করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ মনজুর আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের প্রতিবেদন যাচাইবাছাই করে কর্ণফুলী ড্রাইডক লি. ড্রাইডক নির্মাণ করতে পারবে কি পারবে না পরবর্তিতে জানানো হবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সভাপতিত্বে এতে পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ সহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post