চট্টগ্রাম, ২৪ অক্টোবর, ২০২২:
কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নেমেছে। সড়ক, সমুদ্রসৈকত, পর্যটন স্পট, বিপণি বিতান, সর্বত্র পর্যটকের পদভারে মুখর। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ সবকটি পয়েন্ট ছিল পর্যটকে পরিপূর্ণ। সৈকতের বালিয়াড়ি, ছাতা-চেয়ারে গোসল আর ঘুরে ঘুরে এসব পর্যটক উপভোগ করছেন সমুদ্রের সৌন্দর্য। একই সঙ্গে ইনানী, পাটুয়ারটেক, দরিয়ানগর, সেন্টমার্টিনসহ অন্যান্য স্পটেও ছুটছেন তারা।
এতে পর্যটন শহরের মোড়ে মোড়ে যানজট। অন্যদিকে যানবাহন সঙ্কট। প্রশস্ত চার লেনের সড়কজুড়ে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, রিকশা, অটোরিকশা ও অন্যান্য যানবাহন। এগিয়ে যেতে একে একে বাসের সারি। সেসব বাস থেকে ব্যাগ হাতে নামছে মানুষ। নির্ধারিত স্থানে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত যানবাহন না পেয়ে এসব মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে ফুটপাতে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক গাজী মিজানুর রহমান জানান, স্বাভাবিকভাবে বিপুলসংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ টহল বাড়িয়েছে। সাদা পোশাকেও নজরদারি করা হচ্ছে। পর্যটকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটও মাঠে রয়েছেন বলে জানান তিনি।
এই অবস্থায় যেসব পর্যটক হোটেল বুকিং দেননি তারা পড়েছেন বিপাকে। সকাল ৯টায় কক্সবাজার শহরে পৌঁছেও বেলা ১টা পর্যন্ত কোনো হোটেলেকক্ষ পাননি ভ্রমণে আসা দুই পর্যটক। তাদের একজন জাহিদ। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি জানান, শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। রবিবার বড়দিন। এর মধ্যে বাচ্চাদের পরীক্ষাও শেষ। অনেকেই স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে সপরিবারে পাড়ি জমিয়েছেন সৈকতের তীরে। টানা তিনদিনের ছুটিতে কক্সবাজার ভ্রমণে এসে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। কলাতলীর শতাধিক হোটেলে ঘুরেছেন একটি কক্ষ ভাড়া নিতে। কিন্তু সবাই জানিয়ে দিয়েছেন কোনো কক্ষ খালি নেই। এ পরিস্থিতিতে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন।
শুধু জাহিদ নন, এ রকম আরও অনেকেই হোটেল থেকে হোটেলে ছুটছেন একটি কক্ষ ভাড়া নেওয়ার জন্য। কিন্তু কোথাও নেই। আবার কোথাও অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করে বসছে।
ঢাকা থেকে আসা এক দম্পতি পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, গত সেপ্টেম্বরে তারা কক্সবাজার ভ্রমণে এসে যে হোটেলে ২২০০ টাকা দৈনিক ভাড়ায় ছিলেন। একই হোটেলে একই মানের কক্ষে তারা উঠেছেন ৭ হাজার টাকা ভাড়ায়।
কক্সবাজার সী ফিন্সেস হোটেলের জিএম ব্যবস্থাপনা একরামুল বশর চৌধুরী সুমন জানান, ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার প্রতিষ্ঠানের সব কক্ষ বুকিং। তাই সমস্যা হচ্ছে বাড়তি পর্যটকের চাপ সামলাতে।
এই সুযোগে হোটেলমোটেল মালিকরা ইচ্ছামত পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন। ছবি: সংগ্রহ- কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড়
Discussion about this post