চট্টগ্রাম, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩:
ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৪১২১৮ জন লোক মারা গেছে। এরমধ্যে তুরস্কে কমপক্ষে ৩৫,৪১৮ জন মারা গেছে, সিরিয়ায় ৫,৮০০ জন মারা গেছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর মধ্যে জীবিত লোকদের খুঁজে পাওয়ার আশা কমে গেছে এবং বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তুর্কি কর্তৃপক্ষ বলছে, পশ্চিমে আদানা থেকে পূর্বে পর্যন্ত প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার এবং উত্তরে মালটায়া থেকে দক্ষিণে হাতায় পর্যন্ত ৩০০ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ১৩.৫ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্তক হয়েছে।
সিরিয়ার সীমান্তে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর পরের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির ধরা পড়ছে। যেখানে ধ¦ংসস্তূপ ছাড়া আরকিছু নেই।
তুরস্ক ও সিরিয়ায়র প্রথম ভূমিকম্পটি গত ৬ ফেব্রুয়ারি, সোমবার ভোর ৪:১৭টায় আঘাত হানে এবং কাহরামানমারাস প্রদেশের পাজারসিক জেলায় কেন্দ্রস্থল ছিল। ১২ ঘন্টারও কম সময়ে একই অঞ্চলে দ্বিতীয় ৭.৬ মাত্রার কম্পন আঘাত হানে। ভূমিকম্পের পর ১০০ টিরও বেশি আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছিল । ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে , যে ট্রাক্টর, ক্রেন, বুলডোজার এবং খননকারী সহ ৫,৫০০ টিরও বেশি যানবাহনের সহায়তায় ১১০,০০০ এরও বেশি উদ্ধারকর্মী এই প্রচেষ্টায় অংশ নেবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৯৫টি দেশ সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে আটকে পড়া ব্যক্তিরা এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে বেঁচে থাকতে পারে, হিমাঙ্কের তাপমাত্রায় জীবিতদের খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছে, জরুরি কর্মীরা এখন বিপজ্জনকভাবে কাঠামো ভেঙে ফেলার দিকে মনোনিবেশ করেছে।
সিরিয়া এবং তুরস্ক জুড়ে স্বেচ্ছাসেবীরা সোমবারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তকদের যে কোনো উপায়ে সাহায্য করার জন্য বহু মাইল ভ্রমণ করেছে। ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চল থেকে দূরে, মানুষ বেঁচে থাকাদের জন্য রক্ত, পোশাক এবং খাদ্য দান করতে ছুটে এসেছে।
মানবিক সংস্থাগুলো বলেছে যে ভূমিকম্পটি উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার জনসংখ্যার দুর্ভোগকে মর্মান্তিক করে তুলেছে। যেখানে প্রায় ৪.১ মিলিয়ন লোকের সহায়তা প্রয়োজন।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের সিরিয়া প্রতিনিধি শিভাঙ্ক ধানপালা এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘ভূমিকম্পে সিরিয়ায় প্রায় ৫.৩ মিলিয়ন মানুষ গৃহহীন হয়ে থাকতে পারে।’
‘মানুষ প্রচ- অসহায় হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে,’ আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের (আইসিআরসি) সিরিয়ার মুখপাত্র আদনান হাজেম।
কিন্তু এই অবস্থার মধ্যে আবহাওয়া বেশ বিরূপ হয়ে উঠছে। যা উদ্ধার কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় উদ্ধারকারীরা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কারও ব্যক্ত করা হচ্ছে। এতে উদ্ধার অভিযান আরও ব্যাহত হবে। ধসে পড়া ভবন এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত রাস্তার কারণেও বেঁচে যাওয়া লোকদের খুঁজে পাওয়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গাজিয়ানটেপ শহরের বাইরে তুরস্কে বসবাসকারী লক্ষাধিক সিরীয় শরণার্থীর আবাসস্থল। সেখানে হিমাঙ্কের তাপমাত্রায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার বাসিন্দা।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি প্রদেশে বসবাসকারী ১৫ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে সিরীয় শরণার্থীরা ১.৭ মিলিয়নেরও বেশি। খবর আলজাজিরার সৌজন্যে। ছবি_ ইন্টারনেট
Discussion about this post