চট্টগ্রাম, ১৫ জুন, ২০২৩:
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২০২০বি ব্যাচের ৪০ জন মিডশিপম্যান এবং ২০২৩ এ ব্যাচের ৮ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ মোট ৪৮ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেছেন। এই উপলক্ষে আজ সকালে
চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমিতে মিডশিপম্যান ২০২০বি ব্যাচ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি
অফিসার ২০২৩ এ ব্যাচের গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি
কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। পরে তিনি কৃতি মিডশিপম্যান ও এন্টি অফিসারদের পদক প্রদান করেন। সেখানে সোর্ড অব অনার লাভ করেন সব্বোর্চ মান অর্জনকারী মিডশিপম্যান
আরজু ইহসান।
মিডশিপম্যান মো.ফয়সাল রহমান ২য় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ প্রধান স্বর্ণপদক, মোঃ মিজানুর রহমান, বিএন শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক’ লাভ করেন। পরে নবীন অফিসারদের শপথ পড়ানো হয়।
পরে সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাগণ আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ
গ্রহণ করেন এবং তাদের র্যাঙ্ক পরিয়ে দেয়া হয়।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে
স্মরণ করেন। একই সাথে স্বাধীনতা সংগ্রামী বীর নৌসেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের
কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অসামান্য প্রজ্ঞা, দুরদর্শিতা ও
দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ একটি আধুনিক ও ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে সুপরিচিত। একটি সমৃদ্ধশালী
নৌবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে নৌবহরে সাবমেরিনসহ আধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি
নৌবাহিনীর সাবমেরিনসমূহের অপারেশনাল কর্মকাণ্ড ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কুতুবদিয়ার পেকুয়ায় সাবমেরিন ঘাঁটি
‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ কমিশনিং করা হয়েছে। তাছাড়া পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের নিকট দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের
উপকূলীয় ও সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তায় নির্মিত ‘বানৌজা শের-ই-বাংলা’ ঘাঁটি শীঘ্রই কমিশনিং করা হবে। তিনি আরও
বলেন, ইতিমধ্যে নৌবাহিনীর জন্য খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত ৪টি পেট্রোল ক্রাফ্ট এর নির্মাণ শেষ হয়েছে যা অতিশীঘ্রই
নৌবহরে যুক্ত হবে। সেইসাথে নেভাল এভিয়েশনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২টি ইউটিলিটি হেলিকপ্টার নির্মাণের কার্যক্রম
চলমান রয়েছে। একইসাথে নৌবাহিনীর অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন যুদ্ধজাহাজ সংযোজন ও আধুনিকায়নের
পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
নৌপ্রধান বলেন, আজকের নবীন কর্মকর্তারা নেভাল একাডেমি থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে
নিজেদেরকে যোগ্য কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তুলবে এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা
ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। তিনি পেশা হিসেবে দেশ সেবার এ পবিত্র দায়িত্বকে বেছে
নেয়ায় নবীন কর্মকর্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান। নৌপ্রধান কঠোর প্রশিক্ষণ প্রদানে যেসকল কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক ও নৌসদস্যগণ অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতিও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সশস্ত্র বাহিনীর গর্বিত সদস্য
হিসেবে দেশপ্রেম ও শৃঙ্খলাবোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেশের জন্য কাজ করার আহবান জানান তিনি। সেইসাথে
নৌপ্রধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নবীন কর্মকর্তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজেদেরকে
আত্মনিয়োগ করার নির্দেশনা প্রদান করেন।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, পদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাগণ ও সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।