চট্টগ্রাম, ১৩ জুলাই, ২০২৩:
কর্ণফুলি নদীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের টোল নির্ধারণ করার কথা জানিয়েছে সরকারের সেতু বিভাগ। সর্বনিম্ন ২০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হবে যানবাহন ভেদে। তবে তিন এক্সেলের ট্রাক/ট্রেইলারের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০০ টাকা। চার এক্সেলের ট্রাক/টেইলারের জন্য টোল হবে ১ হাজার টাকা। চার এক্সেলের বেশি হলে এক্সেলপ্রতি আরো ২০০ টাকা টোল দিতে হবে।
আজ ১৩ জুলাই সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নসতু বিভাগ এই সংক্রান্ত এ প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয় – কার, জিপ ও পিক আপের জন্য টোল দিতে হবে ২০০ টাকা। পারাপারের ১২ টি শ্রেণির যানবাহনের মধ্যে মাইক্রেবাসের টোল ২৫০ টাকা, বাস(৩১ আসন বা তার কম) ৩০০ টাকা, ৩ে১ এর চেয়ে বেশি আসনের বাসের জন্য ৪০০ ও তিন এক্সেলের বাসের জন্য ৫০০ টাকা, ৫ টনি ট্রাকের জন্য ৪০০ টাকা, আট টনের ট্রাকের জন্য ৫০০ টাকা, ১১ টনের ট্রাকের জন্য ৬০০ টাকা টোল দিতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব টানেল দিয়ে টোলের আওতায় ১২ শ্রেণির যানবাহন পারাপারের কথা বলা হয়েছে। টানেল চালু হলে দৈনিক ১৭ হাজার ২৬০ এবং বছরে ৭৬ লাখ যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদীর তলদেশ দিয়ে দেশে প্রথম টানেল নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।
প্রথমে টানেল নির্মাণের খরচ ধরা হয় ৮ হাজার ৪৪৬.৬৩ কোটি টাকা। পরে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয় ১০ হাজার ৩৭৪.৪২ কোটি টাকা। এর পর আরেক দফা ব্যয় বাড়ায় প্রকল্পের খরচ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬৮৯.৭১ কোটি টাকা। সর্বশেষ প্রকল্পের খরচ ৩১৫ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছিল।
মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে টানেলের প্রতিটি সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২.৪৫ কিলোমিটার। দুই সুড়ঙ্গে দুটি করে মোট চারটি লেন থাকবে। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫.৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক থাকবে। আর আনোয়ারা প্রান্তে রয়েছে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ উড়ালসড়ক। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ১৮ থেকে ৩৬ মিটার গভীরতায় সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আগামী সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করতে পারেন। গত ২৬ এপ্রিল রাজধানীর সেতু ভবনে মতবিনিময় সভা শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সেপ্টেম্বরে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করবেন।’
আগস্টের মধ্যে প্রকল্পের সব কাজ সম্পন্ন হবে বলে সংবাদ মাধ্রমকে জানান টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ।
Discussion about this post